রোববার (২৪ মার্চ) বিএসএমএমইউর বি ব্লকে ডা. মিল্টন হলে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান এবং টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের পরিচালক (একাডেমিকস) প্রফেসর এস. বানাভালি ও প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক সুমিত গুজরাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনককান্তি বড়ুয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ভারত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিলো এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সময়েও ভারত নানাভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। আজকের এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরও ভারতের সহায়তার অংশ বলেই আমি মনে করি। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় জন্য বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট অত্যন্ত জরুরি। এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট চালু করা সম্ভব হবে। এতে করে দেশের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের মতো অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা সাশ্রয়ীমূল্যে পাবেন এবং অনেক রোগী অকালে মৃত্যুবরণ থেকে রক্ষা পাবেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. গাজী শামীম হাসান, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. চৌধুরী ইয়াকুব জামাল, প্রক্টর অধ্যাপক সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, নবনিযুক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক প্রমুখ।
দেশে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বেড়েছেই চলেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর (২০১৫) ৮৮ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যান। এরমধ্যে ৪ থেকে ৫ শতাংশ হলো রক্তরোগের ক্যান্সার যেমন লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়েলোমা ইত্যাদি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে গত ২০১২ সালের তুলনায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে রক্তরোগের ক্যান্সার ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বংলাদেশে প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ হাজার ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার অভাবে অকালে মৃত্যুবরণ করছে। প্রতি বছর নতুন করে রক্তরোগের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে প্রায় ১২০০ রোগী চিহ্নিত করা হয়। এসব রোগীদের অধিকাংশেরই বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন হয়। কিন্তু ব্যয়বহুল এই চিকিৎসাটি দেশে সহজলভ্য এবং নিয়মিতভাবে চালু না থাকার কারণে অনেক রোগীই অকালে মৃত্যুবরণ করছে। অনেক রোগী বিদেশ চিকিৎসা নিচ্ছে এতে করে প্রচুর বৈদিশক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভারতের মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার ফলে অটোলোগাস ও অ্যালোজেনিক পদ্ধতিসহ বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (বিমটি) পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হবে। বিএমটি-এর অটোলোগাস চিকিৎসায় দেশের বাইরে প্রায় ২০ লাখ টাকা এবং অ্যালোজেনিক চিকিৎসায় ৫০ লাখ থেকে কোটি টাকা ব্যয় হয়।
এই সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৩ মাস পর নিয়মিতভাবে অটোলোগাস ও ৬ মাস পর অ্যলোজেনিক পদ্ধতির বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট চালু করা হবে। এখানে চিকিৎসা ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম হবে। পূর্ণাঙ্গভাবে নিয়মিত বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট চালু হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এমএএম/এমজেএফ