শনিবার (১৩ এপ্রিল) আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসারের শুন্যপদে তারা যোগদান করেন।
যোগদানকৃত চিকিৎসকরা হলেন- ডা. কাশফি আনাম, ডা. বিশ্বজিৎ কুন্ডু, ডা. মাহফুজুর রহমান।
এরআগে, বুধবার (০৩ এপ্রিল) সকালে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-এ ‘আদিতমারী হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসকও প্রশিক্ষণে’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে এ উপজেলার মানুষের নাগরিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জরুরিভাবে তিন চিকিৎসক নিয়োগ দেয় সরকার।
>>>আরও পড়ুন...আদিতমারী হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসকও প্রশিক্ষণে
জানা যায়, লালমনিরহাট-২ আসনের একাংশ আদিতমারী উপজেলার আটটি ইউনিয়নের তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে গড়ে ওঠে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নবম সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরেই এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে অপারেশন থেকে শুরু করে সব ধরনের চিকিৎসার উপকরণ সরবরাহ করা হয়।
ভবন নির্মাণ হলেও জনবল সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি রুগ্ন হয়ে পড়েছিল। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত হয়ে পড়েছে এ উপজেলার মানুষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ৩১ শয্যার জনবল অনুযায়ী জুনিয়র কনসালটেন্টের পাঁচটি পদই শুন্য। মেডিকেল অফিসার ১০টি পদের আটটি শুন্য, একজন প্রেষণে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। ডা. শাহিদা সুলতানা সুচি ছিলেন একমাত্র মেডিকেল অফিসার। স্যাকমো ১০টি পদের ছয়টি শুন্য, একজন বরখাস্ত। মাত্র তিনজন স্যাকমো দিয়ে চলছিল পুরো উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা। টেকনিশিয়ানের দু'টি পদই শুন্য থাকায় প্যাথলজি বিভাগে ঝুলছে তালা। এক্স-রে মেশিন দেড় যুগ ধরে বিকল। ২০০৩ সালের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে চলছে রোগী পরিবহন।
জনবল সংকটে রুগ্ন এ হাসপাতালের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে বাংলানিউজে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের টনক নড়ে। অবশেষে এ উপজেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণে শনিবার (১৩ এপ্রিল) এক সঙ্গে তিনজন চিকিৎসক পাঠানো হয়। তারা তিন জনেই মেডিকেল অফিসারের শুন্যপদে যোগদান করেন। এক সঙ্গে তিন চিকিৎসক যোগদানের খবরে স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। এরপরেও বাকি শুন্যপদ পূরণ, নতুন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও প্যাথলজি বিভাগসহ অপারেশন থিয়েটার চালুর দাবি জানান স্থানীয়রা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মেশকাতুল আবেদ বাংলানিউজকে বলেন, জনবল সংকটের কারণে উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা বেশ কষ্টকর ছিল। বাংলানিউজের প্রতিবেদনের জন্য তিনজন চিকিৎসক পাওয়া গেছে। জনস্বার্থে নিউজ পরিবেশন করায় বাংলানিউজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। প্যাথলজি বিভাগটি চালু করা গেলে অপারেশন থিয়েটারও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. কাশেম আলী বাংলানিউজকে জানান, এ হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসক নতুনভাবে যোগদান করেছেন। প্যাথলজি বিভাগসহ অপারেশন থিয়েটারও খুব দ্রুত চালু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এনটি