এসব সমস্যা ও সংকটের কারণে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মঞ্জুরুল আলমের নানা দুর্নীতি। তার বিরুদ্ধে অপারেশনের জন্য রোগীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহন, ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ, কোয়াটার স্টাফদের কাছে ভাড়া দিয়ে অর্থ আদায়সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের ২৯টি পদের মধ্যে ২৩টি পদই শূন্য। এর সঙ্গে দ্বিতীয় শ্রেণির তিনটি, তৃতীয় শ্রেণির ২৫টি এবং চতুর্থ শ্রেণির দুইটি পদ শূন্য রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে প্যাথলজি বিভাগও বন্ধ। অ্যাম্বুলেন্সও চলছে জোড়া তালি দিয়ে।
রোগী মহিদুল বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাথা নিয়ে এসেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক না থাকায় এখন খুলনা যেতে হচ্ছে।
রফিকুল ইসলাম নামে আরেক রোগী বাংলানিউজকে বলেন, প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে বেশি খরচ দিয়ে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা করালে ফলাফল কতো ভালো হয় বুঝতে পারছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টাফ কোয়াটারে ভাড়া দিয়ে থাকা এক সেবিকা বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে মাসে ১৫শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকি। স্যার (উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা) বলেছেন পরে সব ঠিক করে দেবেন। একইভাবে ওই কোয়াটারে চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারি মাসে ৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকেন। এছাড়াও কয়েকজন সেবিকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে মাসিক ভাড়া দিয়ে ডরমেটরিতে থাকেন।
রোগী কাওসার শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতাল থেকে মাত্র একটি ট্যাবলেট দেয় প্রতিদিন। অন্যসব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। পাঁচদিনে ২৬শ’ টাকার ওষুধ কিনেছি। সরকারি হাসপাতালে টাকা ছাড়া চিকিৎসা হয় না এটাই তার প্রমাণ।
গিমটাকাঠি গ্রামের শ্বাসকষ্টের রোগী চিত্তরঞ্জন সাহা বাংলানিউজকে বলেন, সকালে সাড়ে ৩০০ এবং রাতে ৩৮০ টাকার ওষুধ কিনেছি। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে যদি এতো ওষুধ কিনতে হয় তাহলে আমরা গরীব মানুষ কোথায় যাব।
এ বিষয়ে সেবিকারা বলেন, চিকিৎসকেরা ব্যবস্থাপত্র দেন, সে অনুযায়ী আমরা ওষুধ সরবরাহ করি। উপর পর্যন্ত আমাদের কোনো হাত থাকে না, তাদের নির্দেশেই চলতে হয়। সবই তো আপনারা বোঝেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মঞ্জুরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসক সংকট পূরণের জন্য সরকার কাজ করছে। আমরা রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ পাই। যা পাই তা রোগীদের দেই।
বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. জিকেএম সামসুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মঞ্জুরুল আলমের অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
এনটি