মঙ্গলবার (২১ মে) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বক্তব্য জানানো হয়। মূলত গত শনিবার (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে নিয়োগপ্রত্যাশীদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বিপরীতে এ বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে জানানো হয়, গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএসএমএমইউ’র মেডিকেল অফিসার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল বাতিল ও পুনঃপরীক্ষার দাবি জানিয়ে কিছুসংখ্যক প্রার্থী যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে কিছু অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেডিকেল অফিসার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান নিম্নে তুলে ধরা হলো-
১. মেডিকেল অফিসার নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই কোনো একটি বিশেষ কক্ষে প্রশ্নপত্র খোলার অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রশ্নপত্র মডারেশন, মুদ্রণ এবং প্যাকিং ও সিল করার জন্য গঠিত কমিটি অত্যন্ত সতর্কতা ও গোপনীয়তার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। ওই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না এবং তাদের উপস্থিত থাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার চার দিন আগে কোনো বিশেষ কক্ষে প্রশ্নপত্রের সিল্ড প্যাকেট খোলার প্রয়োজন পড়ে না এবং খোলাও হয়নি। এ অভিযোগটিও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
২. নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত আবেদনের সর্বোচ্চ বয়স ৩২ এর ঊর্ধ্বে অনেক প্রার্থীর নাম বৈধ তালিকায় রয়েছে এ কথা সার্বিকভাবে সত্য নয়। এ ধরনের দু’জন প্রার্থীর (যাদের বয়স ৩২ এর ঊর্ধ্বে) আবেদন ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। একজনের আবেদন প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের সময় ধরা পড়ায় তার আবেদন লিখিত পরীক্ষার আগেই বাতিল করা হয়েছে। তবে ডা. বিদ্যুৎ কুমার সূত্রধর নামে আরেকজন প্রার্থী তার বয়সের প্রকৃত তথ্য গোপন করে আবেদন করেছেন এবং লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। আবেদনপত্রে তার জন্ম তারিখ ২১/০৬/১৯৮৬ উল্লেখ করেছেন, যাহা সঠিক ছিলো না। তার এ ধরনের ইচ্ছাকৃত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুসংখ্যক শিক্ষক ও কর্মকর্তার আত্মীয়-স্বজন নিয়মনীতি অনুসরণ করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, প্রশ্নপত্র মডারেশন, মুদ্রণ এবং প্যাকিং ও সিল করার জন্য গঠিত কমিটিতে ভাইস-চ্যান্সেলর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বা ভাইস-চ্যান্সেলরের পিএস-২ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
৪. ডেন্টালের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন বিতরণের সময় কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে এবং পরীক্ষার হলেই তাৎক্ষণিকভাবে ডেন্টালের প্রশ্নপত্র যথাযথভাবে সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তাই এ নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক সৃষ্টির সুযোগ নাই।
৫. ফলাফল প্রকাশের আগেই পরীক্ষার রোল নম্বরসহ যে তালিকা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে, সেটা ভিত্তিহীন। কারণ এ ধরনের কোনো প্রমাণ বা লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
৬. পরীক্ষা কেন্দ্রে বা হলে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক হাত ঘড়ি বা অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে ঢোকার বিধান নেই (যা প্রতিটি প্রবেশপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ আছে)। তাই এ ধরনের ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে পরীক্ষার উত্তর সরবরাহ করার কোনো সুযোগ নেই। পরীক্ষা চলাকালীন কোনো পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে এ ধরনের ডিভাইস ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেলে বা এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার পরীক্ষা বাতিল হবে।
এখানে লক্ষ্যণীয় হলো যে, গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার দিন থেকে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন অর্থাৎ ১২ মে পর্যন্ত এ নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস বা কোনো ধরনের অনিয়ম বা অসঙ্গতির অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ফলাফল প্রকাশের পর কিছু অকৃতকার্য প্রার্থী এ পরীক্ষা নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেন। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করেন, মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসার (ডেন্টাল সার্জারি) নিয়োগ পরীক্ষা স্বনামধন্য জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাই মেডিকেল অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায় কিছুসংখ্যক অকৃতকার্য প্রার্থী পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের যে দাবি করেছে, তা সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক বিধায় ফলাফল বাতিল বা পুনঃপরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ নাই।
** ‘বিএসএমএমইউতে নিয়োগ পরীক্ষায় ৬টি দুর্নীতি হয়েছে’
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৭ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এমএএম/আরবি/