এ চিত্র ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের। হঠাৎ করেই ভোলা সদর হাসপাতালে শিশু রোগীদের ভিড় বেড়ে গেছে।
প্রচণ্ড তাপদাহ আর আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের আক্রমণ বেড়েছে।
একদিকে ভ্যাপসা গরম অন্যদিকে দুর্গন্ধময় পরিবেশে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
ধারণক্ষমতার অধিক রোগী থাকায় নার্সরাও শিশুদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে-শিশু ওয়ার্ডে ২০টি বেডের বিপরীতে ৭২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীদের চাপ বেশি থাকায় অতিরিক্ত ১৪টি শয্যা আনা হলেও একেকটি শয্যায় ২/৩ জন করে রোগী। গত সপ্তাহে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে একটি শিশুর মৃত্যুও হয়েছে।
শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ খান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শিশু রোগীর অনেক চাপ। শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ থাকায় আমরা চিকিৎসা দিতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি। তবুও আমরা সেবা দিতে চেষ্টা করছি।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল কাদের বলেন, শিশু ওয়ার্ডে যেমন ভীড় ঠিক তেমন অন্যান্য ওয়ার্ডে। ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন জান্নাত বেগম বলেন, যেভাবে গরম পড়ছে এতে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
আরেক অভিভাবক লাবনি বলেন, হাসপাতালে অনেক সমস্যা রয়েছে, একদিকে বেড সংকট অন্যদিকে ডাক্তারও কম। তাছাড়াও হাসপাতালে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এক রোগীর মা শিল্পি বলেন, গরমের কারণে শিশুদের ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে ভোলা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও বর্তমানে ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্থান সংকুল না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
পুরুষ ও নারী মেডিসিন এবং গাইনি ওয়ার্ডেও রোগীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে।
রোগীদের স্বজন উজ্জ্বল হাওলাদার ও নাজমুল সিকদার বলেন, ভোলার মানুষ এ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখানে এসে চিকিৎসা সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এখানে ২৫০ শয্যার আরো হাসপাতাল নির্মাণ হলেও সেটি চালু হয়নি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি শিগগিরই যেন হাসপাতালটি চালু করা হয়। এতে মানুষকে এতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তৈয়বুর রহমান বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি বার বার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত জনবল বাড়েনি। এখানে ২২ জন ডাক্তারের স্থানে রয়েছে মাত্র ১১ জন। এতে কিছুটা সমস্যা তো হচ্ছেই। তবে আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৯
আরএ