চলতি মাসে সদর হাসপাতালে মোট ২৯১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ জন নবজাতক এবং ১৩ বছরের নিচের ২২৮ জন শিশু।
এদিকে অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শহরের শালবন এলাকার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার বলেন, আমার বাচ্চাকে নিয়ে ২৪ জুন থেকে হাসপাতালে আছি। জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরে পরীক্ষা করে জানা যায় তার নিউমোনিয়া হয়েছে। বর্তমানে সে অনেকটাই সুস্থ।
মাটিরাঙ্গার জামতলী থেকে শিশু হর্ষকে নিয়ে আসা তার বাবা মহেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, গতকাল রাত থেকে আমার বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। প্রথমে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে সকালে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ।
এছাড়াও মহালছড়ির মাইসছড়ি থেকে আসা তাসলিমা আক্তার, দীঘিনালার আলোকা চাকমা, রাঙ্গামাটির লংগদুর হাসি চাকমার শিশু সন্তান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স বসুন্ধরা ত্রিপুরা বলেন, চলতি মাসের ২৬ জুন পর্যন্ত ২৯১ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যা স্বাভাবিক সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। এর মধ্যে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেলেও অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ জন রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হলেও আবার একই সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় বর্তমান সময়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মূলত পেট ব্যথা, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শিশুদের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে মা’দের আরো সচেতন হতে হবে। খাওয়ানোর আগে হাত ধোয়া, খাবার ঢেকে রাখা, খাবার গরম করে খাওয়ানো এসব দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া শিশুদের ম্যালেরিয়া হচ্ছে জানিয়ে মশারি টাঙানো, বাড়ির আশপাশে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়ন ময় ত্রিপুরা বলেন, ‘বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডের ৩টি রুম রোগীতে পরিপূর্ণ। এছাড়া সিট না থাকায় মহিলা ওয়ার্ডে অর্ধেকেরও বেশি শিশুদের রাখা হয়েছে। বর্তমানে লোকবল কম হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। তারপরও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ভালোভাবে সেবা দেয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৪ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
এডি/আরএ