মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. বাকির হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত শেবাচিম হাসপাতালে আমরা আটজন রোগীকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করেছি।
তিনি আরও বলেন, মোট আটজন রোগীর মধ্যে একজন ঢাকা থেকে বরিশালে আসার পর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
ডা. বাকির হোসেন বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের আমরা মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখেই চিকিৎসা দিচ্ছি। সবসময় ফলোআপে রাখছি। বিভিন্ন ধরনের সিমটম রয়েছে এসব রোগীদের।
ডেঙ্গুতে চিকিৎসক মারা যাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করে তিনি বলেন, জনসাধারণের জন্য আমাদের পরামর্শ থাকবে, জ্বর হলে ঘরে বসে ওষুধ সেবন না করে, হেলাফেলায় সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে, সরাসরি স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে ২১ জুলাই বরিশাল সদরের তাজুল ইসলাম (২৩), বরিশাল নগরের কলেজ অ্যাভিনিউ এলাকার মোয়াজ্জেম রুবেল (২৭), ১৯ জুলাই বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ফোরকান (১৯), বানারীপাড়ার গিয়াস উদ্দিন (৩০) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে ১৬ জুলাই বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকার মেজবাহ উদ্দিন (২২), বরিশাল নার্সিং কলেজের আফনান আশরাফি (২০) , বাকেরগঞ্জ উপজেলার আরিফুল (৪৮) ও পিরোজপুরের নাজিরপুরের অরুন সুতার (২৮) ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, ডেঙ্গু জ্বরকে ঘিরে বরিশালে বেশ তৎপরতা চালাচ্ছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে নগরবাসীকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত জ্বরে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতার পাশাপাশি প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
পাশাপাশি গত কয়েকদিন ধরে নগরজুড়ে বেশ জোরেসোরে মশক নিধনে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে সিটি করপোরেশন।
বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে ১৫ জন কর্মী মশক নিধনে হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি চার সদস্যের একটি আলাদা টিম সরকারি অফিস, বস্তি এলাকা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মশক নিধনের ওষুধ দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও প্রতিদিন বিকেলে ফগার মেশিনের মাধ্যমে নগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে মশক নিধনের ওষুধ দিয়ে যাচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ নগরকে সার্বিক পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রায় সাড়ে ৪০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু বলেন, মশক নিধনের জন্য বর্তমান মেয়র বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। যার মধ্যে সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে, নিয়মিত মশক নিধনের ওষুধ সরবরাহ করা। আগে বিভিন্ন মাধ্যমে এগুলো সরবরাহ করতে গিয়ে নানা জটিলতা ও বিলম্বের সৃষ্টি হলেও এখন কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করেছেন মেয়র। যাতে গুণগত মান বজায় রেখে সঠিক মূল্যে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করা যায়।
এছাড়া নগরের জনসাধারণকে ডেঙ্গুর বিষয়ে সচেতন করার পাশাপাশি নগর পরিষ্কার রাখা ও নিয়মিত মশক নিধনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ২৫ থেকে ৩১ জুলাই সারাদেশের সঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) উদ্যোগে মশক নিধন কর্মসূচি পালন করা হবে। মেয়র নিজেই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এমএস/আরবি/