ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসক ছাড়া হৃদরোগীকে বাঁচাতে ‘রিসাসিটেশন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
চিকিৎসক ছাড়া হৃদরোগীকে বাঁচাতে ‘রিসাসিটেশন’

ঢাকা: রিসাসিটেশন একটি জীবনরক্ষাকারী প্রক্রিয়া। হঠাৎ হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে বা কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে হৃদযন্ত্র ও শ্বাসপ্রশ্বাস চালু করে তাকে বাঁচানোর চিকিৎসাপদ্ধতিই হলো রিসাসিটেশন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মূলত অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের কাজ হলেও কেবলমাত্র চিকিৎসক নয় সাধারণ মানুষেরও এ পদ্ধতির ব্যাপারে জানা অতি প্রয়োজন। 

বুধবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ১৭৩তম বিশ্ব এনেসথেসিয়া দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথেসিওলজিস্ট আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।  

রিসাসিটেশন চিকিৎসাপদ্ধতি প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, হৃদরোগী যেখানেই অসুস্থ হোক, সেখানেই রিসাসিটেশন চলতে পারে।

হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে বা হার্ট অ্যাটাক করলে সঙ্গে সঙ্গে এ চিকিৎসা দিতে হয়। এ জন্য রোগীকে প্রথমে সমতলের ওপর চিৎ করে শোয়াতে হবে। এরপর একটি হাত প্রসারিত করে অন্য হাতের আঙুল দিয়ে লক তৈরি করতে হবে। হাতের তালুর উঁচু অংশটি পাঁজরের নিচের অংশে ঠিক মাঝ বরাবর স্থাপন করতে হবে। প্রতি সেকেন্ডে ২ বার জোরে জোরে চাপ দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন হাত ভাঁজ না হয়। এমনভাবে চাপ দিতে হবে যেন বুকের উপর-নিচ প্রতিবার দেড় থেকে দুই ইঞ্চি দেবে যায়। এ পদ্ধতিতে ৩০ বার চাপ দিয়ে রোগীর মুখ দিয়ে বাতাস প্রবেশ করাতে হবে। তবে দ্রুত রিসাসিটেশন শেষ করে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অ্যানেসথেসিওলজিস্ট পদ তৈরির আহ্বান জানান।

বিশ্ব এনেসথেসিয়া দিবস উপলক্ষে অ্যানেসথেসিওলজিস্ট সোসাইটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ও বি ব্লকের মধ্যবর্তী বটতলা থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালিও বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বেলুন, পায়রা ওড়ানো এবং শহীদ ডা. মিলন হলে কেক কাটার আয়োজন করা হয়।  

এদিকে একই দিনে বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবস উপলক্ষে আরও একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।  

এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল হান্নান, এ্যানেসথেশিয়া, এ্যানালজেসিয়া অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হাই, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণপ্রিয় দাশ প্রমুখ।

১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ইথার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যথামুক্ত শল্যচিকিৎসা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল। এর পর থেকেইসারা বিশ্বে দিনটি অ্যানেসথেসিয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল, 'দুটি হাত বাঁচাতে পারে অনেক জীবন'।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
এমএএম/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।