তাছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১২৯ জন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বাংলানিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেন।
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন এক লাখ ১০৭ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৯৯ হাজার ৩৮৭ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের ৯৯ দশমিক ৩ শাতংশ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।
ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আরো নতুন ৪৯ জন ভর্তি হয়েছেন ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৫ জন এবং ঢাকার বাইরে আরো ৩৭ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন, ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত) এই সংখ্যা ছিল ৭৩ জন।
শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে ১৯১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সারাদেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন ৪৫৬ জন।
এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ২৬৪টি মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে ২০৪টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১২৯টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এ সংখ্যা এখনও সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মৃত ৯৮ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৬, জুলাইয়ে ৩৫, আগস্টে ৭১, সেপ্টেম্বর মাসে ১২ এবং অক্টোবর মাসে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আর এসব মৃত্যুর মধ্যে শিশুমৃত্যুর হারই সবচেয়ে বেশি বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগে ৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০, খুলনায় ১০, রংপুর ১, রাজশাহীতে ২, বরিশালে ৪, সিলেটে ২ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন।
আর রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩, মিটফোর্ডে ৪, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২, রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে ২, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৪ ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৬ জনসহ ঢাকা শহরের সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত হাসপাতালে মোট ৩৬ জন ভর্তি হয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে হয়েছেন ১৩ জন। সর্বমোট ৪৯ জন।
এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে এক হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ৮৫৬ জন অক্টোবরে আট হাজার ১৪৩ এবং নভেম্বরের ৩০ দিনে চার হাজার ১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাছাড়া বাংলাদেশে ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্তের রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে যার। মধ্যে আগস্ট মাসে ছিল সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
এমএএম/জেডএস