নগরীসহ এর আশপাশের এলাকাগুলোতে গত কয়েকদিন ধরেই পড়ছে তীব্র শীত। এতে ব্যাহত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ-ই ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বেড়েছে আরও বেশি। ভোরে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে যেতে হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে তুলনামূলক হারে।
এছাড়া গত ক’দিন ধরে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে সূর্যের দেখা নেই দুপুর গড়ালেও। সকাল থেকে তীব্র কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো দেখা যায় না সারাদিনেও। সঙ্গে ঠাণ্ডা বাতাসের দাপুটে প্রবাহ বেশ খানিকটা মলিন করে রেখেছে সাধারণ মানুষদের। ফলে গরম পোশাকেই কর্মস্থলে বেরোচ্ছেন কর্মজীবীরা।
কর্মজীবী সোহেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শীতের সময়টা পিঠাপুলি বা সবজির জন্য ভালো হলেও আবহাওয়ার দিক থেকে একটু ভিন্ন। অধিক কুয়াশার কারণে সকালে অফিস যেতে ঠিকমতো যানবাহন পাওয়া পায় না। অফিসে বেরোতেও একটু কষ্ট হয়ে যায়। দিনটাও চলে যায় খুব দ্রুততম সময়ে।
এদিকে এই শীতে সব চাইতে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষগুলো। বিশেষ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু না হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে তাদের। অনেককে দেখা গেছে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন, বাসটার্মিনাল ও মার্কেটের বারান্দায় চোখ রাখলেই দেখা যায় তাদের কষ্ট।
ইনসাব আলী নামে এক বৃদ্ধ বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শীত পড়ছে। বয়স্ক শরীর নিয়ে এই শীতে কষ্টটা বেড়েছে। অনেকেরই গরম কাপড়ের অভাব থাকলেও সাহায্যের জন্য তেমন কেউ হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে না। অন্যান্যবারের মতো শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলে এই সমস্যা একটু হলেও কমবে।
এদিকে শীতের কারণে যেমন নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে, ঠিক তেমনি বিভিন্ন রকম চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। শীতে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, শীতকালে এক বিছানায় চাপাচাপি করে ঘুমানো এবং অপরিষ্কার পোষাক বা দীর্ঘদিন একই পোষাক পরিধান করা, নিয়মিত গোসল না করার কারণে সংক্রমিত হতে পারে এসব রোগগুলো।
এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চর্ম ও যৌন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকটি সাধারণ চর্মরোগ হচ্ছে খোসপাঁচড়া, দাদ। চর্মরোগের লক্ষণ হলো- আঙ্গুলের মাঝখানে, কব্জিতে, কোমরের চারদিকে, শরীরের অন্যান্য অংশেও ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা যায়।
তিনি বলেন, এর থেকে মুক্ত থাকার জন্য অপরিষ্কার কাপড় পরিধান ত্যাগ করতে হবে। পরিষ্কার-পরিছন্ন কাপড় ব্যবহার করলে খোসপাঁচড়া হবে না। নিয়মিত গোসল করতে হবে। গোসলের সময় প্রয়োজনে পানি গরম করে নিতে হবে। গরম পানিতে নিমপাতা দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও উপকার পাওয়া যাবে। আর অবশ্যই ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
এইচএমএস/এসএ