তিনি বলেন, এই ভাইরাস সার্স ভাইরাসের মতো মারাত্মক নয়, তাই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ভ্রমণে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি, তবে যাতায়াতে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামসহ স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, পররাষ্ট্র, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের বিষয়ে আমরা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছি। এই ভাইরাসটি চীনের একটি শহরে শনাক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ভাইরাসের কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। ভাইরাসটি যাতে আমাদের দেশে না আসতে পারে সেজন্য কাজ করছি। বিমানবন্দরে স্ক্যানার বসানো হয়েছে। এই ভাইরাস বাংলাদেশে আসবে না বলে আশা করছি। এলেও আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।
জাহিদ কামাল বলেন, এ বিষয়ে হাসপাতালে অগ্রিম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কুর্মিটোলা হাসপাতাল ও সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড করা হয়েছে। সব জেলায়ও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যতরকম প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে আমরা সবই করেছি।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চীনেও বাংলাদেশের কোনো শিক্ষার্থী এ রোগে আক্রান্ত হয়নি। ভাইরাসটি খুবই সংক্রামক। তবে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য এসময় অনুরোধ জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের উহানে ৩০০ ছাত্র রয়েছে। তারা কেউ আক্রান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্ররা আসতে চাইলে নিয়ে আসা হবে। তবে চীন সরকার আপাতত কাউকে আসতে দেবে না। তাদেরকে ১৪ দিন পর আনতে দেবে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারিতে এই ১৪ দিন শেষ হবে। আর ফেব্রুয়ারি মাসে এর প্রকোপ কমে আসবে।
চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কাউকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিনি। চীন বা পৃথিবীর কোনো দেশও এটা করেনি। তবে চীনে কাউকে অপ্রয়োজনে যাওয়া-আসাটা না করাই ভালো। এক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা যখন নির্দেশ দেবে তখন আমরাও ব্যবস্থা নেবো।
সচিব বলেন, আমরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করবো দুইস্তরে। প্রথমতো যেহেতু এই ভাইরাস আমাদের দেশে উৎপত্তি না সেহেতু, বাইরে থেকে যাতে প্রবেশ করতে না পারে আমরা সেটি প্রতিরোধ করবো। এজন্য বিমান বন্দরে বহিরাগতদের প্রবেশে সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। অন্যটি হলো কোনো কারণে যদি দেশে প্রবেশ করে তাহলে আমরা ভাইরাস ছড়ানোটা প্রতিরোধ করবো। আমরা যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়েছি তাতে আশা করছি এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারবো।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চীন থেকে প্রতিদিন চারটি ফ্লাইটে ৪০০/৫০০ যাত্রী যাওয়া-আসা করেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। গত ১৫ দিনে দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। আর বাংলাদেশ থেকে চীন গেছেন সাত হাজার ৫৭০ জন। তারা অনেকেই আবার ১৫/২০ দিনের মধ্যে চলে আসবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২০
জিসিজি/জেডএস