সোমবার (৯ মার্চ) সকালে সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ প্রায় সবাই মাস্ক পরে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত নন তারা।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া অনেকে রোগীও মাস্ক পরে হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছেন। ডাক্তার, নার্সদের মতো রোগীদেরও একই কথা, আতঙ্ক নয়, সতর্ক থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে হবে।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের ৪টি হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলো হলো- মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মহানগর হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেলে হাসপাতাল। সোমবার (৯ মার্চ) থেকে এসব হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ঢামেকের জরুরি বিভাগের এমার্জেন্সি রুমে ডিউটিরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক এবং নার্স ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স মো. ইয়াকুব আলী খান উভয় জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে তারা আতঙ্কিত নন। তবে ভাইরাসটি খুবই ছোঁয়াচে, তাই মাস্ক পরে নিজেদের নিরাপত্তা বজায় রেখে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরাই যদি করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি, তাহলে প্রতিদিন ঢাকা মেডিকেলে শতশত রোগী চিকিৎসা নিতে আসে তাদের সেবা দেবে কে? তাই আতঙ্ক নয়, সতর্ক থেকে, নিয়ম মেনেই রোগীদের চিকিৎসা দিতে হবে, এই ভাইরাস প্রতিরোধ করতে হবে। ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য এই মাস্ক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাপ্লাই দিয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা আছে।
হাসপাতালে ঘুরে আরও দেখা যায় বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডবয়রা খাতাপত্র নিয়ে ছুটছেন জেনারেল স্টোরের দিকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। সবাই মাস্কের জন্য জেনারেল স্টোরে ভিড় জমিয়েছে। মাস্ক সাপ্লাই দেওয়া হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানান তারা।
জেনারেল স্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মামুন নামের এক ব্যক্তি জানান, আজকে হাসপাতালে প্রায় ৩ হাজারের মতো মাস্ক সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিনকেও মুখে মাস্ক পরে হাসপাতাল পরিদর্শনে দেখা যায়। চিকিৎসকরা ঠিক মতো মাস্ক পরে চিকিৎসা দিচ্ছেন কিনা তাই তদারক করছিলেন তিনি।
করোনা প্রতিরোধ ও প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মোটামুটি আমরা সব ওয়ার্ডেই মাস্ক সাপ্লাই দিয়েছি। বাংলাদেশের সব জেলা থেকেই আমাদের হাসপাতালে রোগী আসতে থাকে। কোন রোগী, কোন রোগে আক্রান্ত সেটা পরীক্ষা করে পরে জানা যায়। কিন্তু শুরুতে তো প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় রোগীকে। যেহেতু বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, এই জন্য যারা রোগীদের চিকিৎসা দেবে তাদের সতর্ক থাকা দরকার। এ কারণে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ সবার কাছে মাস্ক সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য যতো রকম সরঞ্জাম দরকার সবই সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে।
ধানমন্ডি থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢামেকে চিকিৎসার জন্য হাজির হয়েছেন সুশান্ত। তাদের মুখেও মাস্ক। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু করানো ভাইরাস বাংলাদেশে দেখা দিয়েছে, এ জন্যই স্ত্রী-সন্তানসহ মাস্ক পরে হাসপাতালে এসেছি। আতঙ্ক নয়, সতর্ক থেকে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করাই হচ্ছে এখন মূল কাজ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২০
এজেডএস/এইচজে