লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় লোকজন ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সোমবার (১৬ মার্চ) সকালে টলি ট্রাক্টরে করে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদুল হক জানিয়েছেন, আলামত দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রোগটি হাম।
তিনি বলেন, গতকাল রোববার খবর পাওয়া মাত্র আমরা তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তাদের সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২টি ওয়ার্ডকে আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। ৩৩ রোগীকে সেখানে আলাদা করে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
অসুস্থদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ার পাড়া প্রধান লাতুং কারবারী বলেন, গত এক মাস ধরে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুতিয়া ম্রো (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যুও হয়েছে। পাড়ার লোকজন প্রায় সবাই অসুস্থ।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে সোমবার সকালে ট্রাক্টর নিয়ে তাদের বুঝিয়ে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি। না হলে আরও কয়েকজন মারা যেত। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের সব চিকিৎসা ও খাবারের খরচ বহন করব।
এদিকে রোগীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর থবর পেয়ে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ জান্নাত রুমি, লামা পৌরসভার মেয়র ও লামা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের শরীরে হামের মত গুটি উঠেছে। তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তবে পাড়ার আশপাশে যাতে রোগ আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য সেখানে একটি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গমে অবস্থিত পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ার ৮টি পরিবারের প্রায় ৭০ জন শিশু, নারী ও পুরুষ সবাই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
ইতোমধ্যে গত শুক্রবার অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দুতিয়া ম্রো (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে পাড়ার মেনহাত ম্রো এর ছেলে। ওই পাড়াটি লামা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম এলাকা। ওই এলাকায় ব্যবসা করতে গিয়ে আব্দুল কাদের নামে এক ব্যবসায়ীর নজরে আসে বিষয়টি। পরে তার মাধ্যমে সবাই বিষয়টি জানতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২০
আরএ