ব্যক্তি নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু হয়েছে রাজশাহী শহর। খুব প্রয়োজন ছাড়া সারাদিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
এছাড়া স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করায় রাজশাহী মহানগর ছাড়তে শুরু করেছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। যারা গ্রাম ছেড়ে রাজশাহী শহরের এসে বসবাস করছিলেন তাদের অনেকেই করোনা ভাইরাস আতঙ্কে শহর ছাড়তে শুরু করেছেন।
এরইমধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েট ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে হল ছেড়ে রাজশাহী ছাড়ছেন দু’টি শীর্ষ বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীরা। আবার গ্রাম থেকে যেসব পরিবার রাজশাহীতে এসে বসবাস করছিলেন সন্তানের লেখাপড়ার জন্য স্কুল-কলেজ ছুটি থাকায় তারাও ধীরে ধীরে এখন রাজশাহী ছাড়ছেন।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বুধবার (১৮ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী মহানগর এলাকায় করোনা ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকার জন্য প্রচারপত্র বিলি করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এ সময় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস নিয়ে 'আতঙ্ক' নয় 'সতর্ক' থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিকেলে মহানগরের হড়গ্রাম বাজারে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নভেলা করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব রোধে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হকের সঙ্গে এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামসহ জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক করোনা ভাইরাস নিয়ে এখনই আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আহ্বান জানান। জেলা প্রশাসক এ সময় যেকোনো সভা, সমাবেশ ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। বাইরে থেকে আসার পর হাত ধোয়াসহ বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বনের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়া বিদেশ থেকে কেউ ফিরলে তার ব্যাপারে অবশ্যই জেলা প্রশাসনকে তথ্য জানানোর জন্য আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় বুধবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১২০ জন। এরমধ্যে ছয়জন রাজশাহী জেলার বাসিন্দা।
তবে এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিদেশফেরতদের প্রতি সতর্ক রয়েছি। তারা যেন বাড়ির বাইরে যেতে না পারে, সেজন্য সার্বিকভাবে তদারকির জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক বলেন, যারা হোম কোয়ারেন্টাইন আছেন তারা ১৪ দিন নিজ বাড়িতেই অবরুদ্ধ থাকবেন। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলবেন। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেও তাদের নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানেন বা বাইরে বের হয়ে আসেন তবে তাদের বাধ্যতামূলক অফিসিয়াল কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। এছাড়া নির্দেশনা না মানলে সংক্রামক ব্যাধি আইনে তাদের জরিমানা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
এসএস/আরবি/