শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে যশোর সার্কিট হাউজে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির জরুরি সভায় এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, অনেকে বিদেশ থেকে এসে হোম কোয়ারেন্টিনের ভয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়াতে গেছেন।
জেলা প্রশাসক ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শফিউল আরিফ বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ ২৩ হাজার ৩৯৪ জন মানুষ বিদেশ থেকে যশোরে এলেও হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন মাত্র ৩৩২ জন। বাকিরা কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন তার কোনো চিত্র প্রশাসনের কাছে নেই। আমাদের কাছে ২৩ হাজার ৩৯৪ জন ব্যক্তির একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। যাদের পাসপোর্টে যশোরের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তারা সবাই যশোরে অবস্থান করছেন কিনা তা আমাদের জানা নেই।
‘তালিকাটি সব উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। যশোরে অবস্থানরত সব বিদেশফেরত ব্যক্তিকে পর্যাবেক্ষণে আনতে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। আবার অনেকেই যারা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে বলা হচ্ছে তারাও সঠিকভাবে নিয়ম মানছেন না। সঙ্গত কারণে যশোরে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ কাজের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য দিয়ে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ওয়ার্ডের বিদেশফেরত ব্যক্তির হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করবে। কোনো ব্যক্তি কমিটির নির্দেশনা না মানলে জেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করবে। ’
যশোর জেলা সিভিল সার্জন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ সব উপজেলা হাসপাতালে সাড়ে চারশ’ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড, সেবিকা, রোগী পরিবহনের জন্য আলাদা অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া বেনাপোল স্থলবন্দরে করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় জনবল বাড়ানো হয়েছে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্যানার ও অতিরিক্ত হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের সংখ্যার ব্যাপারে কোনো আইন না থাকার কারণে ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। এতে হাসপাতালে ভিজিটিং আওয়ারে লোক সমাগম অনেক বেশি হচ্ছে। আর এতে সংক্রমণ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যতে পারে। তবে সচেতনতার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, যশোর পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দীন শিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিন্টু, জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায়, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
ইউজি/আরবি/