ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শুধু গবেষণার জন্য নমুনা সংগ্রহ করবে আইইডিসিআর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২০
শুধু গবেষণার জন্য নমুনা সংগ্রহ করবে আইইডিসিআর আইইডিসিআর ভবন।

ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের হার কমিয়েছে। এখন থেকে আর চিকিৎসার জন্য নয়, সারাদেশ থেকে শুধু গবেষণার জন্য সীমিত পরিসরে নমুনা সংগ্রহ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

দুই প্রতিষ্ঠানই বলছে, আইইডিসিআরের কাজ শুধু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা নয়। গবেষণা ও প্রশিক্ষণসহ রুটিনমাফিক অনেক কাজ আছে।

নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন সরকারি-বেসরকারি অনেক হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাই সে কাজটি করবে।

আইইডিসিআর বলছে, শুরুর দিকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হতো সংক্রমণের পরিধি জানার জন্য। দেশে বর্তমানে কমিউনিটি লেভেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বোচ্চ চূড়ায় আছে সংক্রমণে হার‌। এখন সংক্রমণের গতিবিধি ও প্রকৃতি জানতে কাজ করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। যতদিন পর্যন্ত সংক্রমণে হার শূন্যের কোঠায় না আসবে ততদিন পর্যন্ত প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করবে গবেষণার অংশ হিসেবে।

জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, শুরু থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের কাজ আমরা করেছি। এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই ছিল। কারণ দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে আছে সেটা জানার জন্য।

‘আমরা এখনো প্রতিদিন ৮শ থেকে ১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করছি। দেশের ৩৩টি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করার নমুনা থেকে ৫ শতাংশ নমুনা আমাদের এখানে পাঠানো হয়। বাকি নমুনাগুলো আমাদের নিজস্ব টেকনোলজিস্ট দিয়ে সারাদেশ থেকে এখনো সংগ্রহ করছি। শুধু মান নিয়ন্ত্রণের জন্য, পরীক্ষার মান ঠিক আছে কিনা সেটা যাচাই করার জন্যই এ কাজগুলো করতে হচ্ছে। করোনা দেশে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ রকম কাজ অব্যাহত থাকবে। ’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানে পাশাপাশি সারাদেশে অস্থায়ীভাবে নমুনা সংগ্রহের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার মডেলে রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৮টি করে ১৬টিসহ বিভিন্ন বিভাগে মোট ৪৪টি করোনা নমুনা সংগ্রহের বুথ বসানো হয়েছে। আরো ৩২০টি বুথ স্থাপন করা হবে। এগুলো প্রক্রিয়াধীন। এসব বুথে সন্দেহজনক করোনা রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, আইইডিসিআর যে নমুনা সংগ্রহ এবং মূল দায়িত্ব থেকে সরে আসছে এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। যেসব গণমাধ্যম এগুলো প্রচার করছে তারা সম্পূর্ণ বিষয় না বুঝে, না জেনে ভুল তথ্য পরিবেশন করছেন। এ প্রতিষ্ঠান শুরু থেকে যেভাবে কাজ করছে এখনো ঠিক সেভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও একইভাবে কাজ করবে।

আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আইইডিসিআরের জনবলের ঘাটতি রয়েছে। অল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে একসঙ্গে অনেক কাজ করা যায় না। রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা প্রতিষ্ঠানের কাজের মধ্যে পড়ে না, কিন্তু অ্যাপিডেমিওলজিক্যাল সার্ভিলেন্সের অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি।

‘কতগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজ পেন্ডিং রয়েছে। অন্য দেশ কোভিড নিয়ে অনেক তথ্যবহুল গবেষণা করেছে। আমরা কিন্তু অতোটা করতে পারছি না। শনাক্ত হওয়া রোগীদের সব তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষণার মাধ্যমে সেগুলো প্রকাশ করবে আইইডিসিআর। ’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। তারা কাজ করছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়ার জন্য। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সারাদেশে বুথ স্থাপন করা হচ্ছে। ব্যাপকহারে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদফতরের। কেউ আইইডিসিআর থেকে নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে একটা এটা সঠিক নয়। সবার আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২০
পিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।