ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

১৫ ভেন্টিলেটরে চলছে রামেক হাসপাতাল!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
১৫ ভেন্টিলেটরে চলছে রামেক হাসপাতাল! ভেন্টিলেট

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা রয়েছে ২০টি। আর ভেন্টিলেটর রয়েছে ১৫টি! করোনা চিকিৎসায় মুমূর্ষু রোগীর জন্য যেখানে দ্বিগুণ ভেন্টিলেটর প্রয়োজন সেখানে বেডের সংখ্যায়ও ভেন্টিলেটর রয়েছে কম। রাজশাহী বিভাগে যেহেতু হু-হু করে করোনারোগী বাড়ছে সেহেতু শয্যা বিবেচনায় অন্তত আরও পাঁচটি ভেন্টিলেটর দ্রুতই প্রয়োজন।

করোনা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত ১৯ এপ্রিল রামেক হাসপাতালের আইসিইউটি করোনা চিকিৎসার উপযোগী করা হয়। এর দুইদিন আগে করোনা শনাক্ত হওয়া এক বৃদ্ধকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়।

রামেক হাসপাতালের ২০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটে এখন ১৫টি ভেন্টিলেটের আছে। চিকিৎসকদের ছয়টি টিম সেখানে নিয়োজিত। একেক টিমে তিন জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স ও চার জন কর্মচারী থাকেন। তারা সাতদিন কাজ করে ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকেন। অথচ সেখানে আরও পাঁচটি ভেন্টিলেটর ও পাঁচটি নেগেটিভ প্রেসার আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা করার কথা ছিল।

এদিকে বিভাগীয় এই শহরে রামেকের ১৫টিসহ মোট মাত্র ২৮টি ভেন্টিলেটর আছে। বাকি ১৩টি রয়েছে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজশাহীসহ উত্তারাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহৎ সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রামেক হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভেন্টিলেটর স্থাপন এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামেক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানান, চাহিদা অনেক। কিন্তু এর সংখ্যা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। কারণ সারাদেশেই ভেন্টিলেটর সংকট রয়েছে। এই অবস্থায় চাহিদার কথা জানালে চাকরি নিয়ে সমস্যা হয়ে যাবে। তবে দিন দিন যেভাবে করোনারোগী বাড়ছে তাতে দ্রুতই বাড়তি ভেন্টিলেটর প্রয়োজন। তাহলে পরিস্থিতি বেগতিক হলে চিকিৎসকরা রোগীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারবেন।

সাধারণত শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে করোনায় কিছু রোগীর ফুসফুস সংক্রমিত হয়। তারা ঠিকমত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন না। এ সময় শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমে যায়। ফলে মানুষের মস্তিস্ক ও হৃদপিণ্ডসহ শরীরের গুরত্বপূর্ণ অংশগুলো অচল হয়ে পারে। এ অবস্থায় রোগীকে আইসিউইউতে নিয়ে ভেন্টিলেটরের সাপোর্ট দিতে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক না থাকলেও রোগীর মৃত্যুর শঙ্কা বাড়ে।   

রামেকের উপাধ্যক্ষ ডা. বুলবুল হাসান জানান, বিশেষ ক্ষেত্রে মুমূর্ষু রোগীর জন্য ভেন্টিলেটর ছাড়া চিকিৎসাকাজ চালিয়ে যাওয়া যায় না। যেকোনো সময় রোগীর অবস্থা সংকাটাপন্ন হলে ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হবে। কারণ আক্রান্ত ৫ শতাংশ মানুষের লাইফ সাপোর্টের জন্য ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন পড়ে থাকে।

তবে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, করোনা পরিস্থিতির আগে রামেক হাসপাতালে ১০টি ভেন্টিলেটর ছিল। বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে পরে পাঁচটি বাড়িয়ে ১৫টি করা হয়েছে। এখন আরও প্রয়োজন আছে। তাই চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ১৫টি ভেন্টিলেটর নিয়েই আপাতত তাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। ভবিষ্যতের জন্য তাদের আরও পরিকল্পনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন উপ-পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।