ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনায় বেড়েছে ওষুধের দাম, বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪২ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২০
করোনায় বেড়েছে ওষুধের দাম, বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম করোনায় বেড়েছে ওষুধের দাম-ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: করোনা ভাইরাস মাহমারির সময় হঠ্যাৎ করেই বেড়ে গেছে বিভিন্ন ওষুধের দাম। বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম থাকায় তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধ। ফলে এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) রাজধানীর শাহবাগ, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সেই সাথে বেড়েছে নাম সর্বস্ব ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্য।

বিকেলে শাহবাগে ওষুধ কিনতে আসা হাফিজুর রহমান নামে এক ক্রেতা জানান, হেমোফেলিয়া রোগে ব্যবহৃত 'বেরিয়েট ৫০০' নামের ইনজেকশনটির দাম এক মাস আগেও ছিল আড়াই হাজার টাকা। করোনায় আমদানি বন্ধের অজুহাতে এখন তা বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকায়।

তিনি বলেন, বাচ্চা অসুস্থ। অনেক দোকান ঘুরেও ওষুধ পাওয়া যায়নি। শেষে যেখানে পেলাম, সেখানে মূল্য রাখলো বেশি। কিছু করার নেই, যেহেতু ইনজেকশন দিতে হবে, সেহেতু বাধ্য হয়েই নিতে হচ্ছে।

এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউন থাকায় বিদেশের কোন ফ্লাইট আসছে না। সেজন্য বিদেশি কয়েকটি ওষুধের দাম বেড়েছে।

করোনা মহামারির এই সময়ে সারাদেশেই ফার্মেসিগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং রোগের মোকাবেলায় ওষুধ সংগ্রহের জন্য তারা ভিড় করছেন ওষুধের দোকানগুলোতে। বিশেষ করে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ বেশ কিছু রোগের ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগে বিভিন্ন স্থানে বাড়তি দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোথাও বেড়েছে সার্জিক্যাল সামগ্রির দামও।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এলাকা ভেদে বিভিন্ন ফার্মেসিতে ৭৫০ টাকার আইভেরা ৬ এমজি ট্যাবলেট ২ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ টাকার স্ক্যাবো ৬ এমজি ট্যাবলেট বিক্রি করছে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। ২৫ টাকার জিংক ট্যাবলেট ৪০ টাকা, ২০ টাকার সিভিট ট্যাবলেট ৩৫ টাকা, ৩৬০ টাকার রিকোনিল ২০০ এমজি ৬০০ টাকা, ৪৮০ টাকার মোনাস ১০ এমজি ট্যাবলেট ৬০০ টাকা, ৩১৫ টাকার অ্যাজিথ্রোসিন ৫০০ এমজি ট্যাবলেট ৫৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

ফার্মেসি মালিকদের অভিযোগ, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধ উৎপাদন করছেন কম, ফলে তারা ওষুধের সরবরাহই পাচ্ছেন কম। বিক্রয় প্রতিনিধিরাই বেশি দাম নিচ্ছেন দোকানিদের কাছ থেকে। এছাড়া মিডফোর্টের পাইকারি বাজার থেকেও কিছুক্ষেত্রে তাদের ওষুধ কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। ফলে সরবরাহ কম থাকায় তাদেরও ওষুধ কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে।

এছাড়া প্যারাসিটামল, নাপা, নাপা এক্সট্রা- ৫০০ এমজির এক পাতা যেটা আগে ছিল ৮ টাকা এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ফেক্সোফেনাডিল গ্রুপের আগের দাম ৭৫ টাকা হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। মনটিন ১০ এমজি একপাতা ২১০ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২৩০ টাকা। মনাস ১০ এমজি প্রতি বক্স ৪১৫  টাকার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে  ৪৮০ টাকায়।

এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রাইমারি তালিকাভুক্ত মাত্র ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করতে পারে সরকার। এর বাইরে অন্যান্য ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। তবে ওষুধের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ব্যবসায়িরা যেন দাম বেশি রাখতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সময় বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২০
এইচএমএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।