ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেশে চীনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা যাচাই করা হবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২০
দেশে চীনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা যাচাই করা হবে

ঢাকা: সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএসএম আলমগীর বলেছেন, চীনের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের ব্যাপারে বিভিন্ন গ্রুপ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা করছে। আমরাও চীনের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনা করছি। তারাও গুরুত্ব দিয়ে যোগযোগের চেষ্টা করছে, আমরাও চেষ্টা করছি। আলোচনা হচ্ছে কিন্তু কবে নাগাদ হবে তার সঠিক সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা একটি ভ্যাকসিন যদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে পারি‌ সেটি যদি কার্যকরী হয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক লাভ। আমাদের আশপাশে যদি কার্যকরী ভ্যাকসিন পেয়ে যাই তখন আমাদের কোম্পানিগুলো রেডি হয়ে যাবে ভ্যাকসিন বানানোর জন্য।

আমাদের দেশে যদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে পারি তাহলে আমাদের একটি অধিকার থাকে। দ্রুততার সঙ্গে আমরা বেশি অগ্রাধিকার পেতে পারি।

তিনি আরও বলেন, চায়না ফাস্ট ফেইজ, সেকেন্ড ফেইজ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করেছে। তারা তাদের আর্মিদের মধ্যে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করেছে। চীনা সরকার একটি অর্ডারের মাধ্যমে আর্মিদের মধ্যে ভ্যাকসিনটা দিয়েছে। আর্মিদের সিকিউরিটির জন্য বহু রকম ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ইউএসএ আর্মিদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে অনুমোদন পায়নি। এটি গণভাবে প্রয়োগের জন্য নয়।

আইইডিসিআর’র সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে চীনের ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল মানে এটা নিয়ে গবেষণা হবে। চীন যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে তার ট্রায়ালে দেখা হবে, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই ভ্যাকসিনটা দিলে তার ভেতরে যে এন্টিবডি তৈরি হবে সেটার প্রটেক্টিভিটি ক্ষমতা কতটুকু, এই ভ্যাকসিন দিয়ে দেশের মানুষের কোনো অসুবিধা কিংবা ক্ষতি হবে কি না, এটার গ্রহণযোগ্যতা কেমন। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা এ দু’টি বিষয় দেখাই হলো মূল উদ্দেশ্য।

তিনি বলেন, এই গবেষণা যখন শেষ হবে তখন দুটি বিষয় দেখা হবে। ১. বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি কতটুকু গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ ভ্যাকসিনটি নিলে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কিংবা কোনো সমস্যা আছে কি না। ২. তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যায় প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে কি না। এটা হলো কার্যকারিতা। এই দুটি বিষয় তখন পাওয়া যাবে, তারপরে প্রশ্ন হলো এই ভ্যাকসিনটা বাংলাদেশ প্রয়োগ করা যায় কি না? তখন এটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

‘গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা একটা প্রস্তাবনা দিবে, আমরা গবেষণা করে দেখেছি যে, এই ভ্যাকসিনটা কার্যকরী অথবা কার্যকরী নয়। যদি কার্যকরী না হয় তাহলে এটি ব্যবহারের প্রশ্নই থাকবে না। আর যদি কার্যকরী হয়, তখন সরকার বিবেচনা করবে এই ভ্যাকসিনটা বাংলাদেশে ব্যবহার করা যাবে কি না। এছাড়াও অন্য যেসব ভ্যাকসিন যেমন বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আছে কিংবা ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে, জার্মানিতে, ভারতের ভ্যাকসিন তৈরি করছে। সেগুলোও মূল্যায়ন করা হবে। এই মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে যদি চাইনিজ ভ্যাকসিনটা বেশি কার্যকরী তাহলে চীনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে গ্রহণ করবে। সুতরাং ট্রায়েল বা গবেষণা বাংলাদেশের জন্য ভালো। একটা এভিডিয়েন্স তৈরি হবে যে ভ্যাকসিনটা কাজ করে ভালো।

তিনি বলেন, চীনের ভ্যাকসিন নিয়ে দেশে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। এটি ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে শুরু হতে পারে। এই ভ্যাকসিনটা ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) যদি অনুমোদন দিয়ে থাকে। তাদের অনুমোদন সাপেক্ষে এটি যেকোনো সময় দিতে পারবে। অনুমোদন পত্রে সব শর্ত সংযুক্ত থাকবে। সাধারণত ভলান্টিয়ারদের মধ্যে এই ভ্যাকসিন ট্রায়াল দেওয়া হয়ে থেকে। যাদের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ৬০ বছরের নিচে হয়ে হতে হবে। তাদের সবাইকে স্বাভাবিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। তাদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নাই। এরকম কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে তাদের উপর প্রয়োগ করতে হবে।

চীনের ভ্যাকসিন দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা ঝোরা বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি সরকারের পলিসির ব্যাপার। এগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও নানা রকম কূটনীতিক বিষয় জড়িত রয়েছে। এগুলো আমাদের জানার বিষয় নয়। এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২০
পিএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।