ঢাকা: যেকোনো সময় করোনা সংক্রমণের হার হু হু করে বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন হেলথ অ্যান্ড হোপ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বর্তমানে মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস ভীতি কমে যাওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার ফল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে একথা বলেন।
দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এখনো পুরোটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি, এমতাবস্থায় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অফিস-আদালত, কল-কারখানা, যানবাহন সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে করোনার স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাস্ক ছাড়াই মানুষের চলাচল যেমন বেড়েছে, তেমনি মানুষে মধ্যে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনীহা দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে করোনায় সংক্রমণের হার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে পাঁচ শতাংশের নিচে এলে তখন আমরা বিপৎসীমার নিচে আসবো। সুতরাং, এখনও করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি বিপৎসীমার কয়েকগুণ উপরে রয়েছে বলেই মত চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের।
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিন্মমুখী, ঊর্ধ্বমুখী বা একই ধারায় প্রবাহমান- এটা বোঝার জন্য যত সংখ্যক টেস্ট হওয়া দরকার সেটি হচ্ছে না। যে পরিমাণ কমিউনিটি জরিপ হওয়া দরকার সেটিও হচ্ছে না। ফলে এই পরীক্ষা দিয়ে করোনার গতি-প্রকৃতি, ধরন বলা সম্ভব নয়।
‘আমরা একটা জিনিস বুঝতে পারছি, মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণও করছে। আমরা করোনায় মৃত্যুর যে খবর পাই, সেখানেও সমগ্র দেশের সব হাসপাতালের মৃত্যুর খবর আসে না। শুধু দেশের সরকারি কিছু হাসপাতালের মৃত্যুর খবর পাই। ফলে এই অপ্রতুল তথ্য থেকে করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি বলা সম্ভব না। ’
তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা ভাব ও মানুষের মধ্যে অচেতনতার ফলে যেকোনো সময় করোনার সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে যেতে পারে। পৃথিবীর অনেক দেশেই আমরা করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার এমন দৃশ্য দেখেছি। বাংলাদেশে সেটা হলে দুঃখজনকভাবে হলেও আমাদের অনেক জীবন দিয়ে, ভোগান্তি দিয়ে ও অর্থনীতির ক্ষতি দিয়ে সেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, আমাদের দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, তখন জনগণের মধ্যে থেকে করোনা-ভীতি কমাটাই স্বাভাবিক। করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যে কার্যক্রম চালু রাখা দরকার সেটা আমরা করছি না। করোনাকে আমরা তার নিজের মতো করেই চলতে দিচ্ছি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যেন নিজ থেকেই কমে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
আরকেআর/এএ