ঢাকা: করোনার কারণে সৃষ্ট প্রাদুর্ভাব ও সংকটের মধ্যেও দেশের প্রথম সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ভবনের অবকাঠামোগত কাজ শতভাগ এবং সামগ্রিক কার্যক্রম ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, সুপার স্পেশালাইজড হাসাতালের মূল ভবন দ্বিতীয় তলা বেজমেন্টসহ ভবনের সব ফ্লোর নির্মাণসহ কাঠামোগত (স্ট্রাকচারাল) কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ভবনে ইটের কাজ (ব্রিক ওয়ার্ক), প্লাস্টার, ফিনিশিং ওয়ার্ক, বেস প্যানেল, টেরাকোটা প্যানেল, অ্যালুমিনিয়াম লুবার, অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ অন্য কাজসহ সামগ্রিক কার্যক্রম ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান জানান, এ হাসাতালের নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সাড়ে ৬০০ শ্রমিক দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
বিএসএমএমইউয়ের তথ্য মতে, নবনির্মিত হাসপাতাল ভবনের প্রথম ফেজে থাকবে স্পেশালাইজড অটিজম সেন্টারসহ ম্যাটারনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল কেয়ার সেন্টারসহ অন্য সেন্টারসমূহ। দ্বিতীয় ফেজে থাকবে জেনারেল সার্জারি, অফথালমোলজি/ডেন্টিস্ট্রি/ডার্মাটোলজি সেন্টারসহ অন্য সেন্টারসমূহ।
ডা. জুলফিকার রহমান খান বাংলানিউজকে বলেন, এ হাসপাতাল থেকে হার্ট, কিডনী, লিভারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে অক্রান্ত রোগীরা একই সেন্টার থেকে সব ধরনের সেবা নিতে পারবেন। বিশ্বমানের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ থাকবে হাসপাতালটি। রোগীদের সব রেকর্ড রাখা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। রোগ নির্ণয়ের সর্বাধুনিক সুবিধাসহ থাকবে লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সুবিধা।
তিনি আরো জানান, সেকেন্ড ফেইজে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও রাখা হবে।
জানা যায়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল হবে একটি রোগীবান্ধব সুবজ হাসপাতাল। হসপিটাল ইনফরমেশন সেন্টার চালু করার মাধ্যমে রোগী ও হাসপাতাল পরিচালনা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধাসহ জনসাধারণ এখানে সাশ্রয়ীমূল্যে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা পাবেন।
এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি স্বাস্থ্য সেবার এক নতুন দিগন্ত উম্মোচন করবে। বিশেষ করে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা ও প্রশিক্ষণের দিগন্ত প্রসারিত হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটির মাধ্যমে ‘বিদেশ নয়, দেশেই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা’ দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, চিকিসার জন্য প্রতিবছর দেশের বাইরে চলে যাওয়া ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
তাদের মতে, এ হাসপাতালটি চালু হলে প্রতিদিন বর্হিবিভাগে দুই হাজার থেকে চার হাজার রোগী সেবা নিতে পারবে। হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে প্রতিবছর প্রায় ২২ হাজার রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে।
সোমবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্বমানের সেন্টার বেইসড হাসপাতালের নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্বমানের এই হাসপাতালটির সামগ্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তখন থেকেই দেশের মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে এই হাসপাতাল থেকে।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী যতো দ্রুত সম্ভব হাসপাতালের নির্মাণ কাজসহ অন্য কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২০
পিএস/এনটি