ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছেছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন 

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছেছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন  দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছেছে ভ্যাকসিন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন।

মানুষের মনে এই টিকার প্রতিক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দৈনিক পত্রিকাতে বিজ্ঞাপন দিয়ে তথ্য দেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয় ভ্যাকসিন। বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবর।

বরিশাল: বরিশালে প্রথম বারের ৩ লাখ ১২ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। বেলা পৌনে ১টায় বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বাসুদেব কুমার জানান, প্রথমভাগে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার মধ্যে পিরোজপুর ব্যতীত বাকি ৫ জেলায় মোট ২৬ কার্টনে ৩ লাখ ১২ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় ১০ কার্টন, ঝালকাঠিতে এক কার্টন, ভোলায় পাঁচ কার্টুন, পটুয়াখালীতে চার কার্টন ও বরগুনায় ২ কার্টন রয়েছে।  

এছাড়া ৪ কার্টন অর্থাৎ ৪৮ হাজার ডোজ বিভাগীয় কার্যালয়ের অধীনে জমা রাখা হবে, কোথাও সংকট থাকলে সেখানে যাতে জরুরি ভিত্তিতে পাঠানো যায়।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছেছে করোনার প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন। সকালে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে পৌঁছায় ভ্যাকসিনগুলো। এসময় সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা গাড়ি থেকে ভ্যাকসিন নামিয়ে নির্দিষ্ট কক্ষে সংরক্ষণ করেন।

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার জন্য প্রথম ধাপে ৩৬ হাজার ডোজ করোনার ভ্যাকসিন হাতে পাওয়া গেছে। এই ভ্যাকসিন ৩৬ হাজার জনকে দেওয়া যাবে। জেলা সদরসহ উপজেলা হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হবে ভ্যাকসিন। জেলার চার উপজেলাতেই ভ্যাকসিন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পৌঁছেছে করোনা ভ্যাকসিন। সকালে সুরক্ষিত ভ্যাকসিন বহনকারী পিকআপে ৫ কার্টুন ভ্যাকসিন কুষ্টিয়ায় পৌঁছায়।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, কার্টনভর্তি ভ্যাকসিনগুলো কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই স্টোরে সংরক্ষিত করা হয়েছে। প্রতি কার্টুনে ১২০০ করে মোট ৬ হাজার ভায়াল আছে। এতে ৬০ হাজার ভ্যাকসিন রয়েছে এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে ৩০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।

মেহেরপুর: মেহেরপুর জেলায় কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। সকাল ১০টার সময় মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রথম চালান এক কার্টুন (১২ হাজার টিকার ডোজ) এসে পৌঁছায়।

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জে করোনা ভাইরাসের ৪৮ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পৌঁছেছে। যা দিয়ে জেলার ৪৮ হাজার মানুষকে দেওয়া যাবে। আগামী ৭-৮ ফেব্রুয়ারি এ জেলায় টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে সুরক্ষিত অবস্থায় ১ লাখ ৮০ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। বেলা সাড়ে ১১টার পর বেক্সিমকো ফার্মার কাভার্ড ফ্রিজার ভ্যানে রাজশাহী জেলা ইপিআই স্টোরে ১৫টি কার্টনে ভ্যাকসিনগুলো এসে পৌঁছালে তা গ্রহণ করেন সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার।

নওগাঁ: নওগাঁয় পৌঁছেছে করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন। সকাল ৭টার দিকে ভ্যাকসিন বহনকারী একটি ফ্রিজার গাড়ি করে নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয়ে করোনার ৮৪ হাজার ডোজ টিকা এসে পৌঁছায়।  

ভোলা: ভোলায় পৌঁছেছে ৬০ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন। এসব করোনা ভ্যাকসিন স্বাস্থ্য বিভাগের ‘ইপিআই’ ভবনে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, টিকা আসার পর তা ইপিআই ভবনে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিভাগ, পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ ১৭ ক্যাটাগরির মানুষকে এ টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।  

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথম ধাপে ৪ হাজার ৮শ’ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এসব ভ্যাকসিন বুঝে নেন। পরে সেগুলো ইপিআই স্টোরের বিশেষ ফ্রিজে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

তিনি আরও জানান, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং জেলার প্রতিটি উপজেলা হাসপাতাল থেকে সক্ষম ব্যক্তিকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী সুরক্ষা অ্যাপ ডাউনলোড করে অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে এ ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

মাদারীপুর: মাদারীপুরে করোনা ভাইরাসের প্রথম চালানের টিকা এসে পৌঁছেছে। প্রথম চালানে আসা এ টিকা জেলার ৩৬ হাজার মানুষকে দেওয়া যাবে। একটি ভায়েল থেকে ১০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। অর্থাৎ ৩ হাজার ৬০০ ভায়েল থেকে ৩৬ হাজার মানুষকে এ ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তারা। আগামী ৬ বা ৭ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্য টিকাদানের দিন ঠিক করে প্রস্তুতি চলছে।

জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর হাসপাতাল ছাড়াও চারটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে টিকা সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভ্যাকসিনগুলো সবই সদর হাসপাতালের ইপিআই ভবন থেকে সরবারহ করা হবে।

গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে ৩৬ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। শুক্রবার দুপুরে জেলা ইপিআই ভবনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন রিসিভিং কমিটি তিনটি কাটুনে এ ভ্যাকসিন বুঝে নেয়।  

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, জেলা প্রশাসকের কার‌্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রোকনুজ্জামান ও এস এম সাবিবুর রহমানসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।  
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল বুথ থেকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।  

পটুয়াখালী:  পটুয়াখালী জেলার মানুষের জন্য আট চল্লিশ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। এসময় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধ, ঔষধ প্রশাসন ও বেক্সিমকো ফার্মার প্রতিনিধিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে।  প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে মোট ৬ জন দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে দুই জন টিকাদানকারী এবং চার জন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। একটি টিকাদানকারী দল দৈনিক গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে টিকা দিতে পারবে।

ঝিনাইদহ: প্রথম ধাপে ৬০ হাজার ডোজ করোনার ভ্যাকসিন ঝিনাইদহে পৌঁছেছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের কার্যালয় চত্বরে এ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম। এসময় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সিভিল সার্জন বলেন, প্রথম ধাপে ৫টি কার্টুনে ৬০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন বুঝে নেওয়া হয়েছে। এটি ইপিআই ভবনের স্টোর রুমে রাখা হয়েছে। আগামী ১ এবং ২ ফেব্রুয়ারি সিভিল সার্জন অফিসে প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আশা করছি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে।

মাগুরা: মাগুরায় এসে পৌঁছেছে বহুল প্রতীক্ষিত মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক টিকার ২৪ হাজার ডোজ।

জেলার ভারপ্রাপ্ত সির্ভিল সার্জন ডা. রেজোয়ান আহমেদ ভ্যাকসিনগুলো গ্রহণ করেন। এসময় এন ডিসি মো. আল ইমরান ও বেক্সিমকো ফার্মার বিতরণ বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

নরসিংদী: নরসিংদীতে প্রাথমিকভাবে করোনা ভাইরাসের ৭২ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পৌঁছেছে। শুক্রবার  সকালে বেক্সিমকো ফার্মার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি কাভার্ড ভ্যানে করে এসব ভ্যাকসিন নরসিংদীতে আসে। সিভিল সার্জন মো. নূরুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আপাতত এসব ভ্যাকসিন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওয়াক ইন কোলার (ডব্লিউআইসি) বা হিমায়িত কক্ষে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী রোববার কিংবা সোমবার থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিকা দেওয়ার জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকসহ কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এই জেলায় টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

শেরপুর: শেরপুরে পৌঁছেছে করোনা ভাইরাসের ৩৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন। শুক্রবার সকালে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনওয়ারুর রউফ।  

জেলায় আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে ডাক্তার, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  

প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাবেন স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, মিডিয়াকর্মীসহ বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ। জেলা সদরে ৮টি ভ্যাকসিন টিম ও ৪টি উপজেলায় ২টি করে ভ্যাকসিন টিম কাজ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
এনটি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।