ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

দেশে করোনায় ১৫৫ চিকিৎসকের মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২১
দেশে করোনায় ১৫৫ চিকিৎসকের মৃত্যু

ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৫৫ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৯১১ জন চিকিৎসক।

এছাড়া নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ চিকিৎসাসেবা সংশ্লিষ্ট মোট আট হাজার ২০৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বৃবিতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৪ এপ্রিল দেশে করোনায় প্রথম চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছরের জুন মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সর্বোচ্চ ৪৫ জন চিকিৎসক মারা যান। সেপ্টেম্বর মাস থেকে চিকিৎসকদের মৃত্যুর হার কিছুটা কমে। গত বছর কনোরায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১২৫ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়।

বিএমএর তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আবার কনোরাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়ে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান পাঁচ চিকিৎসক। ফেব্রুয়ারিতে মারা যান একজন। মার্চে মারা যান তিনজন। দেশে চলতি মাসেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মোট ১৫৫ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।

সংগঠনটির হিসাব মতে, আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি। এরপরে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অবস্থান। এসব বিভাগে ১০৫ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা রংপুর, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের। এ পর্যন্ত আক্রান্ত নার্সের সংখ্যা দুই হাজার। এছাড়া আরও তিন হাজার ২৯৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন আট হাজার ২০৭ জন।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সূত্রে জানা যায়, দেশে সর্ব প্রথম ১৪ এপ্রিল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার মঈন উদ্দিন আহমেদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ঢাকার একটি হাসপাতালে। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সবশেষ ২৭ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ও যশোরের একতা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আবদুল ওহাব তরফদার। তিনি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসকরা এখন অনেক সচেতন। তবে আরও সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে সরকারের উচিত সম্মুখসারির সেবাদানকারী চিকিৎসকদের প্রতি আরও নজর দেওয়া।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ও আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫৫ জন চিকৎসকের মৃত্যুতে স্বাস্থ্যখাতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এদের বেশিরভাগ প্রবীণ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন। তবে সরকার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় চলতি বছরে আট হাজার চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দিয়েছে। আরও দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ হবে। এটি স্বাস্থ্যখাতের সফলতা বলা যেতে পারে। একসঙ্গে এত নিয়োগ আগে কখনো হয়নি।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৪৫০ জনের। আর নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ১৭৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ জনে। ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৩২৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ছয় লাখ ৮২ হাজার ৪২৬ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২১
পিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।