ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ধরন ছড়ানোর আশঙ্কা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ধরন ছড়ানোর আশঙ্কা কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় ধরন ছড়ানোর আশঙ্কা। ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক আসার পর চালক ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

বন্দরের জিরো পয়েন্টে স্বাস্থ্য বিভাগের ঢিলেঢালা তদারকির কারণে ভারতীয় ট্রাক চালকরা নির্বিঘ্নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে মেলামেশা করায় এই আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্টে চেক পোস্টের কাছে ভারতীয় ট্রাক চালকদের তাপমাত্রা পরিমাপ করার পর কাগজ-পত্রে এবং চালকের হাত-পায়ে স্প্রে করা হচ্ছে অনেকটা দায়সারাভাবে। ট্রাক নিয়ে আসা ভারতীয় চালকরা দুই একজন মাস্ক পড়লেও বেশিরভাগ চালকই মাস্কহীন চলাফেরা করছেন। বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করাসহ সবাই মিলে একসঙ্গে হোটেলে খাবার খাচ্ছেন।

স্থলবন্দরের লোড আনলোড শ্রমিক নজরুল ইসলাম, শ্রমিক আব্দুস সাত্তার জানান, পেটের দাহায় কাম করি, করোনা ভয় করলে চলবো। তাইলে তো পেটে ভাত যাইবো না। যে গরম পড়ছে আল্লাহর রহমে আমগোর করোনা ধরবো না। এই গরমের মধ্যে মাস্ক পড়ে শ্বাস নেওয়া খুব কষ্ট হয়। কামের সময় মাস্ক পড়ি না, যে হারে ঘামি তাতে শরীরের কাপড়-চোপড় ভিইজা যায়।

আসাম রাজ্যের ধুবড়ি জেলার ছাগুলিয়া গ্রামের ভারতীয় ট্রাক চালক ইমরান আলী বাংলানিউজকে জানান, হাম লোক গাড়িলিয়ে আয়গা। উধার চেক কিয়া। এধার হামলোক কো চেক কিয়া। হামলোক বাংলাদেশি পার্টি লেগিয়া থা। হোটেল মে খানা খিলায়া। আভি যানেকে বুলায়ে। আভি বাপাচ চালা যায়গা ইন্ডিয়া। মাস্ক হে না সাথ মে। দো-দো মাস্ক হে হামারা পাচ মে। বহুত গাড়মি হেয় না। একলা ঘুরনাহু। এলিয়ে নেহি মুখ মে।

কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু বাংলানিউজকে জানান, ভারতে কি ধরণের চেক আপ করা হয় তা আমাদের জানা নেই। বাংলাদেশে ভারতীয় চালকদের কোয়ারেন্টিন রেখে পণ্য আনা নেওয়া করা হচ্ছে না। বাংলাদেশি শ্রমিক ও স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে তারা মেলামেশা করছে। এতে ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পরার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের জরুরি ভাবে দেখা উচিৎ।

কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারী সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, দেশে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এই স্থলবন্দর। ভারতীয় ট্রাক চালকদের আসার ব্যাপারে স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর নজরদারী রয়েছে। এই বিষয় নিয়ে শ্রমিক সংগঠনসহ বন্দরের সংশ্লিষ্টদের সজাগ করার পাশাপাশি তাদের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে বন্দরের শ্রমিকদের কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহ করে শতভাগ নিশ্চিত হতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্থলবন্দরে যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। তাদের কোনো প্রকার গাফিলতি থাকলে তা ক্ষতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২১
এফইএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।