ঢাকা : যেসব গর্ভবতী মায়েদের ডায়াবেটিস আছে তাদের শিশুদের জন্মগত সমস্যা স্বাভাবিকের চেয়ে চারগুন বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে বলে একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে।
উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডে চার লাখ গর্ভবতী নারীর উপর গবেষণা করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডায়াবেটোলোজিয়া নামে একটি জার্নাল।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মায়েদের ডায়াবেটিস আছে সেসব শিশুদের জন্মগতভাবেই হৃদরোগ এবং স্পাইনা বিফিডা রোগ বেশি দেখ দেয়।
এজন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন যে, গর্ভধারণের আগেই রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে হবে। শিশুদের যে ধরণের ডায়াবেটিস থাকে তাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস বলে। তবে পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হয় যা রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেনা।
সুগার লেভেল কমিয়ে না ফেললে গর্ভাবস্থায় নানান সমস্যা দেখা যেতে পারে। সুগার লেভেল বেশি থাকলে অনেক সময় শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দেয়, গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে এবং শিশুর ওজন মাত্রাতিরিক্তি বেড়ে যায়। যখন টাইপ-২ ডায়াবেটিস থাকে তখন এ বিষয়গুলোর ক্ষতিকারক দিকগুলো আরও বেড়ে যায় বলে ওই গবেষণায় দেখা গেছে।
নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৪০ লাখ ১ হাজার ১শ ৪৯ জন গর্ভবতী নারীর উপর এ গবেষণা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
সেখানে দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় যেসব নারীর মধ্যে ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দিয়েছে তাদের প্রতি ১ হাজার জনের মধ্যে ১৯টি শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা গেছে।
অন্যদিকে যেসব গর্ভবতী নারীর ডায়বেটিস আছে তাদের প্রতি ১ হাজার জনের মধ্যে ৭২টি শিশু জন্মেছে বিভিন্ন জন্মত্রুটি নিয়ে।
তাই রক্তে সুগারের মাত্রা যাতে আপ-ডাউন না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য গর্ভধারণের আগে রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে হবে বলে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছেন।
নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক ডা. রুথ বেল জানান, এই ধরণের সমস্যাগুলো গর্ভধারণের চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে। কিন্তু সমস্যাটা তখনই বেশি হয় যখন একজন নারী গর্ভধারণের আগে তার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে না।
তিনি বলেন, অবশ্যই একজন ডায়াবেটিস রোগী নারীকে গর্ভধারণের আগে তার রক্তে সুগারের মাত্রা ৬ দশমিক ১ মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ সময় : ১৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১২