ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

নেটওয়ার্ক-সার্ভার জটিলতায় টিকা নিবন্ধনে বিড়ম্বনা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
নেটওয়ার্ক-সার্ভার জটিলতায় টিকা নিবন্ধনে বিড়ম্বনা নেটওয়ার্ক-সার্ভার জটিলতায় টিকা নিবন্ধনে বিড়ম্বনা

পটুয়াখালী: মোবাইল ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ও সুরক্ষা সার্ভার জটিলতায় করোনার টিকা নিবন্ধনে বিড়ম্বনার কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন পটুয়াখালী রাঙ্গাবালী উপজেলার হাজার মানুষ।

উপজেলার বড় বাইশদিয়া, মৌডুবি, চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের করোনা টিকা নিয়ে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিয়েছে।

এ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ পর্যন্ত ২০ হাজার লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে বড় বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণটিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব এলাকার মানুষের জন্য এক হাজার ডোজ টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে সেখানে এসে আগের কোনো রকমের রেজিস্ট্রেশন করে আসা ৪০০-৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু বিগত দিনে শত চেষ্টা করেও নিজের টিকার নিবন্ধন করতে পারেনি এলাকার আব্দুর রশিদ (৬৯) কুলসুম বেগম (৫৫) এরকম শত শত মানুষ।

এছাড়াও মৌডুবি, চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজ ইউনিয়নেও একই অবস্থা। মাঝে মধ্যে ইন্টারনেট এলেও সার্ভার জটিলতায় নিবন্ধন হচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ একমাস চেষ্টা করেও তারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি। বড় বাইশদিয়া ইউনিয়নটি মাত্র ৪০ বর্গ কিলোমিটার হলেও মোবাইল টাওয়ার মাত্র ২-৩টি। এতে ইন্টারনেট সুবিধা খুবই স্লো।  

এদিকে, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির অর্থায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারী বাস্তবায়নে ও পটুয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের সহযোগিতায় বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা সুরক্ষামূলক আচরণ এবং টিকা নেওয়া তরান্বিতকরণ প্রকল্পের এই দ্বীপ উপজেলার ২৬ হাজার জনগণকে করোনা টিকাদানে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগকে জনবল, পরিবহন, প্রচার ও বিনামূল্যে করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশনে সহযোগিতা করা হচ্ছে।



প্রকল্পটির আওতায় স্থানীয়রা স্বেচ্ছাসেবকরা ক্যাম্পের আগে ৭-৮ দিন ধরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে বিনামূল্যে স্বল্প কিছু নিবন্ধন করতে পারলেও বেশির ভাগ এই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

এ প্রকল্পের ভলান্টিয়ার রায়হান আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কোনোভাবে ইন্টারনেট পেলেও সুরক্ষা অ্যাপসের তথ্য যাচাই-বাছাই হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ২-১টা হলেও তাও ৪-৫ মিনিট সময় নিচ্ছে।

চরগঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সরকার সারাদেশে টিকা দিলেও আমরা নিবন্ধনের জন্য দিতে পারছি না। এছাড়াও আমাদের বিদ্যালয়ের অনলাইনে বিভিন্ন কাজ করতেও গিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি। তবে এ স্কুলে বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইটের মাধ্যমে সরকারিভাবে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণও করেগলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব নাগরিকদের টিকা দেওয়া হলেও আমরা উপকূলীয় অঞ্চলে নেটওয়ার্ক ও সার্ভার জটিলতায় বিড়ম্বনায় পড়ছি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য টিকা নিয়ে গেলেও অনেকেই নিবন্ধনের অভাবে টিকা নিতে পারছেন না। তবে নতুন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ২৬ হাজার জনগণকে টিকা দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, সমস্যা সমাধান হলে দ্রুত টিকা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।