ঢাকা : মানবসভ্যতার ইতিহাসের আদিযুগ থেকেই পেঁয়াজের ব্যবহার শুরু হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব সমাজেই বিভিন্ন রান্নায় পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্যে পেঁয়াজ একটি মৌলিক উপকরণ, এবং প্রায় সব রান্নাতেই আমরা এটি ব্যবহার করি।
বর্তমানে কাঁচা, জমানো, আচার, চূর্ণ, কুঁচি, ভাজা, এবং শুকনো করা পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়।
রান্নায় স্বাদ নিয়ে আসতে পেঁয়াজের জুড়ি নেই। পাতে টুকরো পেঁয়াজ কিংবা দো’পেঁয়াজা ইলিশ যেখানেই হোক না কেন বাঙালির রসনায় পেঁয়াজের উপস্থিতি থাকবেই।
পেঁয়াজকে ভিনেগার বা সিরকাতে ডুবিয়ে আচারও বানানো হয়।
পেঁয়াজের জজ্ঞানিক নাম Allium cepa. এটি সাধারণত ঝাঁঝালো, মিষ্টি ও তিতা স্বাদের হয়ে থাকে।
তাই পেঁয়াজ আমাদের সবার কাছে এতো পরিচিত একটি নাম। প্রতিদিনের খাদ্যে পেঁয়াজের ব্যবহার আমরা কম বেশি সবাই করে থাকি। কিন্তু আমরা ক’জনই এর গুনাগুণ সর্ম্পকে জানি।
সংস্কৃতে ‘ফালানডু’ হিসেবে খ্যাত পেঁয়াজকে ঔষধি এবং আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
পেঁয়াজ বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ, ব্যাথা, যৌন শক্তি কমে যাওয়া, শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া, অকালে বীর্যপাত কিংবা কামশক্তি কমে যাওয়া রোধ করে।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় পেঁয়াজের ব্যবহারের কথা বলেছেন। আমরা সাধারণত দুই ধরনের পেঁয়াজ দেখতে পাই- লাল এবং সাদা রঙের। পেঁয়াজের রঙের উপর ভিত্তি করে এর ব্যবহারের কথা বলেছেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
এখানে পেঁয়াজের আরোগ্যময় দিকগুলো হলো:
• বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ এবং রোগ প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের বাত এবং বাতজনিত রোগ থেকে মুক্তি দেয়। আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, বাত ছাড়াও হাড় এবং শরীরের সংযোগ স্থলগুলোতে প্রদাহ থাকলে তা প্রতিহত করে পেঁয়াজ।
• পেঁয়াজের সঙ্গে অন্যান্য ভেষজ পাতার প্রলেপ ব্যবহার করলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে ওঠা এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
• মুখের কালো দাগ দূর করতে এর রস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
• কান ব্যথা এবং চোখে ঝাপসা দেখা থেকে রক্ষা করে পেঁয়াজের রস।
• যকৃত পুনর্গঠনে সাহায্য করে। এছাড়া হজম ক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে, ক্ষুধা বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য (অর্শরোগ) এবং জন্ডিসের চিকিৎসায় পেঁয়াজ উপকারী।
• কাশি কমানোর জন্য বাড়িতে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
• এর বীজ ব্যবহার পুরুষের অকাল বন্ধ্যাত্ব থেকে রক্ষা করে।
• রক্তপাত বন্ধে সাহায্য করে। বিশেষ করে অশ্বরোগ এবং নাকে দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধে সাহায্য করে।
• বিভিন্ন ধরনের খোঁস-পাঁচড়া থেকে দেহকে রক্ষা করে পেঁয়াজ।
• এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে।
এছাড়া পেঁয়াজ আমাদের বিশ্লেষণ ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা এবং দেহকে সুদৃঢ় করে। তাই সকলের উচিত প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পেঁয়াজের ব্যবহার নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ সময় : ১৫০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২