জয়পুরহাট: অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ১০ বেডের কোভিড ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) প্রস্তুত করা হয়েছে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে। মার্চ মাসেই আইসিইউ কার্যক্রমটি চালু করা করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার মো. রাশেদ মোবারক বাংলানিউজকে জানান, আর্টিফিসিয়াল শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর জন্য ভেন্টিলেটর মেশিন, অটোমেটিক সিরিঞ্জ পাম্প মেশিন, কার্ডিয়াক মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে পালস, প্রেসার, অক্সিজেন স্যাচুরেশন এবং ইসিজি করা যাবে।
৬০-৮০ লিটার পার মিনিটে অক্সিজেন সাপ্লাই দেওয়ার জন্য হাইফ্লোনেজাল ক্যানোলা স্থাপন, শ্বাসনালী পরিস্কার করার জন্য সাকার মেশিন, শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখার জন্য বিপেপ এবং সিপেপ, হঠাৎ বন্ধ হওয়া হার্টকে শক দিয়ে সচল করার জন্য ডিফিব্রিলেটর স্থাপন এবং প্রতিটি বেডের বিপরীতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন, একটি ইয়ার ও একটি ভ্যাকিউম লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন এমন রোগীকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর বাইরের কোনো হাসপাতালে যেতে হবে না।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায়, ৫০ শয্যা থেকে ১৯৯৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ১০০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। অবকাঠামোগত সুবিধা থাকায় একই জনবল দিয়ে ২০০৬ সালের ১৬ জুলাই ১৫০ শয্যার হাসপাতাল চালু করা হয়। সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট জেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষের জন্য এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও আধুনিক সুযোগ সুবিধা ও স্বাস্থ্য সেবার মান ভালো হওয়ায় পার্শ্ববর্তী নওগাঁ জেলার ধামইরহাট, বদলগাছী, দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ ও বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ রোগী আসে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে।
ফলে ১০০ বেডের হাসপাতাল হলেও সব সময় ২৫০-৩০০ রোগী ভর্তি থাকেন এখানে। জেলাবাসীর ২৫০ শয্যায় উন্নীত করনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী এই হাসপাতালকে ১০০ থেকে ২৫০ বেডে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় দ্রুত। যার অনুমোদিত প্রাক্কলন মূল্য হচ্ছে ৩৬ কোটি ৩৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৩ টাকা।
জানা যায়, ১০ বেডের কোভিড ইনটেনসিভ কেয়ার ইফনিট (আইসিইউ) প্রস্তুত করার জন্য সরকারের বরাদ্দের পাশাপাশি স্থানীয় সহায়তায় প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে এই কার্যক্রমে।
এখানে ১২ তলা ফাউন্ডেশনে সপ্তম তলা পর্যন্ত অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়েছে। ৪০টি গাড়ি রাখার পার্কিং বেজমেন্টসহ, চারটি লিফট, অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জরুরি বিভাগ, অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজি, রেডিওলজি বিভাগ, এ্যানেসথেসিয়া, ইমেজিং বিভাগ, মেল-ফিমেল সার্জারি বিভাগ, গাইনী অবসসহ ক্যান্টিন ও মেডিক্যাল স্টোর রয়েছে। জেলা গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ কাজ ও যন্ত্রপাতিও বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য বিশিষ্ট সমাজ সেবক রাজা চৌধুরী বলেন, জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে সরকার ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এতে জেলার সাধারণ মানুষ উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা পাবেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালের ৯৮ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল পদায়নের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫০ শয্যার এ হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২২
এনটি