বান্দরবান: বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম মিনতুই পাড়া ও পমপং পাড়া নামে দুইটি ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। এরই মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে গত রোববার (২৪ এপ্রিল) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দুর্গম মিনতুই পাড়া ও পমপং পাড়ার ২০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমানে নয়জন রোগী এখনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাইনুদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অধিকাংশই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আর তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রোবিন বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে ভিড় করছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যা সংখ্যা ৫০টি হলেও অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় মেঝেতেও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপের সংবাদে আলীকদম সেনা জোনের একটি মেডিক্যাল টিম সোমবার দুপুরে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের বড় কলারঝিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প করে স্বাস্থ্য সেবা দেয়। মেডিক্যাল ক্যাম্পে মিনতুই ও পমপং ম্রো পাড়াসহ আশপাশের এলাকার মোট ১২৫ জন রোগীকে চিকিৎসা এবং বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। এসময় দু’টি ম্রো পাড়ার ৩৩ জন শিশু, ৪৬ জন নারী, ৩৬ জন পুরুষকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। যাদের ৬০ শতাংশ ডায়রিয়ার রোগী।
লামার দুর্গম ম্রো পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী জানান, তাপমাত্রা বাড়ায় প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। ফলে বান্দরবানের লামা উপজেলাসহ জেলার বিভিন্নস্থানে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে।
প্রতিবছরই এ সময়টায় প্রচণ্ড গরমের কারণে আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। প্রতিবছর ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে অনেকে মৃত্যুবরণও করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এসআই