ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সিলেটে ‘অবৈধ’ ৩৯ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
সিলেটে ‘অবৈধ’ ৩৯ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার!

সিলেট: অনুমোদনহীন থেকেও ‘অবৈধভাবে’ সিলেট নগর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে ৩৯টি ক্লিনিক ও ডায়গানস্টিক সেন্টার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নগরীতে ১৬টি এবং উপজেলাগুলোতে রয়েছে ২৩টি।

নগর এলাকায় ১৬টির মধ্যে ৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিক এবং ১২টি ডায়গানস্টিক সেন্টার। উপজেলাগুলোর ২৩টিই অনুমোদহীন ডায়গানস্টিক সেন্টার রয়েছে। কোনো ধরণের নিবন্ধন ছাড়াই এসব প্রতিষ্ঠান এতদিন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় ৩৭২টি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডায়গানস্টিক সেন্টার রয়েছে। তন্মধ্যে নগরীতে ৭১টি হাসপাতাল-ক্লিনিক, ৯৮টি ডায়গানস্টিক সেন্টার ও ৭টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। এছাড়া উপজেলাগুলোতে ১০৩টি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়গানস্টিক সেন্টার রয়েছে।

রোববার (২৯ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে সিলেটের জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে।

সিলেট নগর, গোয়াইনঘাট, বালাগঞ্জ ও বিশ্বনাথে অভিযান পরিচালনা করা হয় ১৯টিতে। এর মধ্যে ৭টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়। আর ১২টিকে সতর্ক করে ১৫ দিন সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অভিযানের খবর পেয়ে নগরের দক্ষিণ সুরমার ভার্তখলায় অবস্থিত মা ও শিশু ক্লিনিক তালাবন্ধ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছেন।

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযানের প্রথম দিনে নগরে অনুমোদনহীন ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্টেডিয়াম মার্কেটে অবস্থিত ‘সিলেট ইন-ডেন্টাল ক্লিনিক ও সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ সিলগালা করা হয়। পশ্চিম দরগা গেইট আলীয়া মাদরাসা মাঠ সংলগ্ন আশ-শেফা মেডিক্যাল সার্ভিসেস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আশ-শেফা ফার্মেসিকে সিলগালা করা হয়। ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। আর অনুমোদনহীন সূর্যের হাসি ও সুখের হাসি নামে দু’টি ক্লিনিকে রোগী থাকার কারণে ১৫দিন সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। তারাও লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

এছাড়া গোয়াইনঘাটে ৫টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ২টি ডায়গানস্টিক সেন্টার সিলগালা ও ৩টিকে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। বালাগঞ্জে ৬টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ২টি ডেন্টাল ক্লিনিক সিলগালা এবং ৪টি ডায়গানস্টিক সেন্টারকে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিশ্বনাথে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ৩টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান করা হয়েছে। এর মধ্যে কাগজপত্রহীন একটি ডায়গানস্টিক সেন্টার সিলগালা এবং দু’টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তন্মধ্যে মা মনি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১৫ হাজার এবং সন্ধানী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ জানান, জরিমানাকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গবেষণাগারে বিপুল পরিমাণ মেয়াদবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ রোগ নির্ণয়ের সামগ্রী পাওয়া গেছে। যে কারণে সেসব প্রতিষ্ঠানে জরিমানা করা হয়েছে।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জরিমানার পক্ষে নয় জানিয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, জরিমানা করলে তারা ব্লাকমেইলিং করে সুবিধা নেয়। আমরা সময় দিয়েছি। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের ভুলগুলো সংশোধন করতে না পারলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। কেননা, আমরা চাই সবাই নিয়মের মধ্যে আসুক।

রোববার বিকেলে দরগাগেইট এলাকায় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় আশ-শেফা ক্লিনিক ও ফার্মেসি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। পরে নগরের ডাক্তারপাড়া খ্যাত  রিকাবীবাজারে স্টেডিয়াম মার্কেটে সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে অবৈধ পন্থায় গজিয়ে ওঠা অন্যান্য সব ডায়গানস্টিক সেন্টার, ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি ও ভুয়া চিকিৎসকরা চেম্বার বন্ধ করে সটকে পড়েন। এসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

অভিযানিক দলের সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অভিযান চালানো হবে। যেসব উপজেলায় অভিযান হয়নি, সেগুলোতেও অভিযান পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৯ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এনইউ/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।