ঢাকা: দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী। একটানা প্রায় আড়াই মাস দৈনিক সংক্রমণ একশর নিচে থাকলেও বর্তমানে তা হু হু করে বাড়ছে।
সর্বশেষ গত ০৬ জুন শনাক্তের হার ছিল একের নিচে শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। এরপর ৭ জুন শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় এক দশমিক ১৪ শতাংশ, ৮ জুন এক দশমিক ১৮ শতাংশ, ৯ জুন এক দশমিক ১৫ শতাংশ, ১০ জুন এক দশমিক ৩৫ শতাংশ, ১১ জুন এক দশমিক ১৪ শতাংশ, ১২ জুন দুই দশমিক ছয় শতাংশ, ১৩ জুন এক দশমিক ৯১ শতাংশ, ১৪ জুন তিন দশমিক ৫৬ শতাংশ, ১৫ জুন তিন দশমিক ৮৮ শতাংশ। ১৬ জুন শনাক্তের হার বিপৎসীমার ওপরে পাঁচ দশমিক ৭৬-এ উঠেছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রসঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। গত এক মাস সংক্রমণের হার শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ ছিল। করোনা পরীক্ষা আরও বেশি করলে, হয়তো আরও বেশি শনাক্ত হবে। করোনায় কোনও মৃত্যুও নেই, তবে সংক্রমণ বেড়ে গেলে, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও বাড়বে, মৃত্যুও বেড়ে যাবে। আমাদের সতর্ক হতে হবে, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মাস্ক পরা ভুলে গেলে চলবে না, আমরা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাই। যারা বুস্টার গ্রহণ করেননি, তারা যেন টিকা গ্রহণ করেন, টিকা নিলে আপনারা ভালো থাকবেন, সুরক্ষিত থাকবেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরইমধ্যে দেশে করোনার আরেকটি ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। করোনা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শিথিলতা দেখানো, অসচেতনভাবে চলাফেরা, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় না রাখা এবং অনেকের মধ্যেই টিকা গ্রহণে অনাগ্রহের কারণেই দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে।
বর্তমানে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় এটি দেশের পঞ্চম ঢেউ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন।
ডা. মোস্তাক হোসেন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, দেশে করোনার পঞ্চম ঢেউ শুরু হয়েছে। এটাকে অনেকেই আবার চতুর্থ ঢেউ বলছে। এতো অল্প সংখ্যক করোনা পরীক্ষায় শতকরা পাঁচ ভাগ শনাক্তের হার দেখে এটাকে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বলা যাবে না। তবে নিঃসন্দেহে করোনার পরবর্তী ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন মানুষ খুব একটা করোনা টেস্ট করাচ্ছে না। তবে সংক্রমণ যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন পর্যায়ে পৌঁছানোর আশঙ্কাও রয়েছে।
পঞ্চম ঢেউ মোকাবেলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদেরকে মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। যারা টিকা গ্রহণ করেননি তাদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে বের করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনা প্রতিরোধে টিকা নেওয়া খুবই দরকার, না হলে হয়তো হঠাৎ করেই আমরা দেখবো চীনের সাংহাই বা উত্তর কোরিয়ার মতো অনেক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
আরকেআর/ইআর