ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

লজ্জা নয়, সচেতনতাই স্তন ক্যানসার রোধ করতে পারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২২
লজ্জা নয়, সচেতনতাই স্তন ক্যানসার রোধ করতে পারে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবসের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা। ছবি: জি এম মুজিবুর 

ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেছেন, কোন ট্রেনে যাবেন তার প্ল্যাটফর্ম ও সময় জানতে হবে। সময় শেষ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য গেলে কোনো লাভ হয় না।

লজ্জা নয়, সচেতনতাই স্তন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে।

সোমবার (১০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবসের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। স্তন ক্যানসার দিবস উপলক্ষে ক্যানসারবিরোধী ও নারী সংগঠনসহ ৩৫টি সংগঠন সকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করে। যা জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।

নাসিমা বেগম বলেন, একজন রোগী যখন চিকিৎসা নিতে যান, চিকিৎসক খুবই আন্তরিক কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় তারা হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছেন। দালালদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি থাকা উচিত। এটা ঠিক হলে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হবে না।

সভায় উপস্থিত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। স্তন ক্যানসারে চিকিৎসা ব্যয় বহুল উল্লেখ করে সচেতনতার পাশাপাশি সময়মত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার ব্যাপারে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।

জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, ২০ লাখ ক্যানসার রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এ পরিসংখ্যানের বাইরেও অনেক ক্যানসার রোগী আছেন এদেশে। ট্যাবুর কারণে সমাজে নারীরা রোগ লুকিয়ে রাখেন। সুতরাং শুধু সচেতনতা নয়, জন সম্পৃক্ততাও অনেক বেশি জরুরি।  

বিবিএস’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৭২ শতাংশ নারী অত্যাচারিত। সুতরাং গোলাপী সব সময় খুব সুন্দর নয় বলে উল্লেখ করেন ড. হালিদা হানুম আখতার।

৫০০ জন ক্যানসার রোগীকে নিয়ে করা একটি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে হালিদা হানুম বলেন, বেশিরভাগ মানুষই জানে না আর্লি ডায়াগোনেসিস করালে ঝুঁকি থাকে না। দেশি-বিদেশি পরিসংখ্যান বলছে প্রতি এক লাখ নারীতে ২২ দশমিক ৫ বা ২৩ জন ক্যানসারে ভুগছেন। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ হাজার নারীতে একজনের ব্রেস্ট ক্যানসার। এটা বর্তমানে এক নম্বর ক্যানসারে পরিণত হয়েছে। ৬০ শতাংশ মানুষ জরায়ু ক্যানসার সম্পর্কে জানলেও স্তন ক্যানসার সম্পর্কে জানে মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ। মানে এটা সবার কাছে পরিচিত নয়। স্তন ক্যানসারের লক্ষণ গোটা হওয়া এটা কিছু মানুষ জানলেও কিছুই জানে না এমন মানুষের সংখ্যা ৩২ শতাংশ। স্তন ক্যানসার ডায়াগনোসিস সম্পর্কে কিছুই জানে না প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ। স্ক্রিনিং সম্পর্কে ও ৬০ শতাংশ মানুষ জানেই না।

পরিসংখ্যান উল্লেখ করার পর হালিদা হানুম বলেন, আমরা এখনো না জানান জায়গায় আছি। নারীর অভিভাবকে জানতে হবে চিকিৎসাগুলো কেমন হয়। তাহলেই প্রতিবন্ধকতা শেষ হবে, সচেতনতা বাড়বে। এ বিষয়ে পুরুষদের সবচেয়ে বেশি সচেতন করে তুলতে হবে। তাদের জানাতে হবে।

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেড় লাখ লোক প্রতিবছর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। তিন ধরনের ক্যানসারে বাংলাদেশের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়। সবগুলোকে একই ছাতার নিচে এনে সচেনতা বাড়ানো গেলে এ ক্যানসারগুলো বিস্তার লাভ করবে না। সবাই মিলে কাজ করলে এবং নিজেরা স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হলে ক্যানসারকে এড়িয়ে চলা সম্ভব। প্রিভেনশন শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। শিক্ষা ক্ষেত্রকেও এবিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২২
এইচএমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।