ঢাকা: সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সচেতনতায় স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে কালের কণ্ঠ ও ইউনাইটেড হাসপাতাল আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া লিমিটেডের কনফারেন্স রুমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. এ.এম পারভেজ রহিম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসির রিজভী, বিএসএমএমইউ’র সার্জারি অনুষদের ডিন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সেক্রেটারি প্রফেসর মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ন্যশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসাইন্স অ্যান্ড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজির অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী, ইউনাইটেড হাসপাতালের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. আলিম আক্তার ভুঁইয়া, ডা. সৈয়দ সায়ীদ আহমেদ, ইউনাইটেড হাসপাতালের হেড অব আউটরিচ মার্কেটিং ডা. ফজলে রাব্বি খান, নিউরো স্পাইন সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক মো. বদরুল আলম, অধ্যাপক ডা. মালিহা হাকিম প্রমুখ।
গোলটেবিল বৈঠকের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের জুনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. এস এম সাদলি।
মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, স্ট্রোক সম্বন্ধে অনেকেই ভুল ধারণা পোষণ করেন। অনেকেই স্ট্রোক বলতে হার্ট অ্যাটাক বোঝেন। স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাক এক নয়, স্ট্রোক হয় মাথায়। বর্তমান সময়ে স্ট্রোক মহামারি পর্যায়ে চলে এসেছে। স্ট্রোক সারাবিশ্বে অন্যতম প্রধান মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের কারণ। প্রতি বছর প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোক স্ট্রোকের শিকার হয়। এর মধ্যে ৫৫ লাখ লোক স্ট্রোকের কারণে মারা যায় এবং ২৫ বছরের বেশি বয়সী প্রতি চারজনের একজন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. এ.এম পারভেজ রহিম বলেন, সংক্রামক বা অসংক্রামক যে কোনও রোগে প্রতিরোধ হচ্ছে সব থেকে বড় উপায়। এজন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য শিক্ষামূলক প্রচারণা চালাই। স্বাস্থ্য শিক্ষামূলক প্রচারণার উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনসচেতনতা বৃদ্ধি। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে মানসিক সুস্থতা জরুরি হয়ে পড়েছে। মানসিক অসুস্থতা শুধু স্ট্রোক নয়, আরও অনেক রোগের সৃষ্টি করছে। দৈহিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বৈঠকে অন্যান্য চিকিৎসকরা বলেন, স্ট্রোক করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে স্ট্রোকের সব আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যমান রয়েছে। স্ট্রোকের লক্ষণগুলো আমাদের জানতে হবে। লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে। স্ট্রোকের সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিলে বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
বৈঠকে বলা হয়, ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত শাকশবজি ফলমূল খাওয়া, রেড মিট, ফাস্ট ফুড ও চর্বি জাতীয় খাবার কম করে খাওয়া, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ব্যায়াম এবং জনগণকে সচেতন করে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। জনগণকে সচেতন করতে গণমাধ্যম অনেক বেশি অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
আরকেআর/এসএ