শেরপুর: শেরপুরে হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
দেখা দিয়েছে কলেরা স্যালাইনের সংকট।
আজ সোমবার বিকেলে শেরপুর জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ডায়রিয়া রোগীরা বারান্দায় এবং মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে, সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জেলা হাসপাতালে নতুন করে ২৪ জন রোগী ভর্তিসহ ১০৮ জন ভর্তি ছিলেন। আরো ২০ জনকে ছুটি দেওয়াসহ এদিন হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪১ জন। আগের দিন রবিবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১৩৪ জন। তার আগের দিন শনিবার ভর্তি ছিলেন ১৩৬ জন এবং শুক্রবারে ভর্তি ছিলেন ১৪৩ জন ডায়রিয়া রোগী।
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ২৫/৩০ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে। কিন্তু গত ২৩ অক্টোবর থেকে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। প্রতিদিন ডায়ারিয়া আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৩০/৪০ জন করে রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্তদের বেশিরভাগই শহরের গৌরিপুর, সজবরখিলা ও চাপাতলি এলাকার বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. নাহিদ কামাল কেয়া বলেন, গত ১০ দিনে হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগী বেড়ে গেছে। যে কারণে কলেরা স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জরুরি ভিত্তিতে কলেরা স্যালাইন এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছি।
শেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে শেরপুর শহরের কয়েকটি এলাকা থেকেই বেশি সংখ্যা ডায়রিয়া রোগী আসছে। চাপাতলি, গৌরিপুর ও সজবরখিলা এলাকার রোগীর সংখ্যাই বেশি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, খাবার পানির সমস্যার কারণে এমনটি হতে পারে। সেজন্য শেরপুর পৌরসভার মেয়রকে ওইসব এলাকার পানি পরীক্ষা সহ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, হঠাৎ করেই শেরপুর শহরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যে কারণে জেলা হাসপাতালে কলেরা স্যালাইনের কিছুটা সংকট হয়েছে। আমরা উপজেলাগুলো থেকে জরুরি ভিত্তিতে স্যালাইন এনে সংকট সামাল দিতে চেষ্টা করছি। ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে এনিয়ে আমি কথা বলেছি। তিনিও স্যালাইনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতার মধ্যেই ডায়রিয়ার বিষয়টি আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শহরের কয়েকটি এলাকার ডায়রিয়ার প্রকোপের বিষয়টি আমাদেরকে জানানো হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ওইসব এলাকায় মঙ্গলবার থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২২
এসআই