বিএনপির জনপ্রিয় নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরের নামে ধারাবাহিক অপপ্রচার চালিয়ে তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে প্রয়াত লতিফুর রহমান ও সিমিন রহমানের ট্রান্সকম গ্রুপের পত্রিকা প্রথম আলো। বাবরের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তথাকথিত প্রেক্ষাপট তৈরি করে প্রথম আলো বাবরের জীবন থেকে মূল্যবান ১৭টি বছর কেড়ে নেয়।
এ সময় প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার বাবরের বিরুদ্ধে লাগাতার অপপ্রচার এবং মিথ্যাচার করে। বাবরের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তথাকথিত প্রেক্ষাপট তৈরি করে প্রথম আলো। প্রথম আলোর উদ্দেশ্যমূলক এবং মতলবি প্রতিবেদনে জজ মিয়াকে প্রথম উপস্থাপন করা হয় এবং এ মামলায় বিএনপির কাল্পনিক সম্পৃক্ততা আবিষ্কার করে প্রথম আলো। মূলত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা রাজনৈতিক আবরণ দেওয়ার সব বানোয়াট তথ্য-উপাত্ত প্রথম আলোর আবিষ্কার। এসব কাল্পনিক রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই লুৎফুজ্জামান বাবরকে ফাঁসানো হয়। সর্বোচ্চ আদালত ২১ আগস্ট মামলার রায়ে বাবরকে খালাস দিয়েছেন। চূড়ান্ত রায়ে বলা হয়েছে, মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে, সে অভিযোগ কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন। কিন্তু এ কাল্পনিক অভিযোগটি করেছিলেন প্রথম আলোর বিতর্কিত সাংবাদিক টিপু সুলতান। শুধু তাই নয়, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও লুৎফুজ্জামান বাবরকে ফাঁসানো হয়েছিল প্রথম আলোর মাধ্যমেই। ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনাটিও সাজিয়েছিল প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। ভারতের আজ্ঞাবহ প্রথম আলো, ডেইলি স্টার তাদের প্রতিবেদনটি এমনভাবে রচনা করে, যাতে মনে হতে পারে তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রথম আলোই বাবরের বরাত দিয়ে একটি ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘খালেদা জিয়ার সম্মতিতে বসুন্ধরার কাছে ১০০ কোটি টাকা চেয়েছিলেন তারেক’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রিমান্ডে থাকাকালে বাবর নাকি এ কথা বলেছেন। সম্প্রতি বাবর মুক্তি পেয়ে এ বক্তব্য ‘ডাহা মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, একজন ব্যক্তি রিমান্ডে থাকা অবস্থায় কী বলবেন না বলবেন সেটা সম্পূর্ণ গোপনীয়। এ গোপনীয় তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা শুধু অনৈতিক নয়, আইনের দৃষ্টিতে দ নীয় অপরাধ। কিন্তু প্রথম আলো এ দণ্ডনীয় অপরাধের কাজ করেছে। পরে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
২০০৭ সালের ৫ জুন প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার একযোগে বাবরের বিরুদ্ধে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পুলিশ নিয়োগে দলীয়করণ ও অর্থের লেনদেন হয়েছে। ’ বাবর এসব করেছেন বলেও প্রথম আলোর মনগড়া, বানোয়াট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রথম আলো যেন নিজেই আদালত, নিজেই রায় দিয়ে দেয়। প্রথম আলো ওই প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, লুৎফুজ্জামান বাবর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় পুলিশের যে নিয়োগ হয়েছে তাতে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেদনে কোনো তথ্যপ্রমাণ ছিল না। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রথম আলোর প্রধান কাজই ছিল বিএনপির চরিত্রহনন। বিএনপির মন্ত্রী-এমপিদের নানা দুর্নীতির কল্পকাহিনি প্রকাশ করা। বিএনপিকে জঙ্গিদের দোসর হিসেবে প্রমাণের আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে প্রথম আলো। শুধু তাই নয়, এ সময় তাদের মূল লক্ষ্য ছিল, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা এবং বিষোদ্গার রচনা। এখন আবার প্রথম আলো, ডেইলি স্টার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। তারা ভোল পাল্টে বিএনপিপ্রেমী হওয়ার চেষ্টা করছে। খালেদা জিয়ার প্রতিও ‘মেকি সহানুভূতি’ দেখাচ্ছে। তাদের অতীত অপকর্ম যেন কেউ স্মরণ না করে। ২০০৭ এবং ২০০৮ সালের প্রথম আলোর সমস্ত প্রতিবেদন মুছে দেওয়া হয়েছে অনলাইন থেকে। কিন্তু যারা প্রথম আলোর অপসাংবাদিকতা এবং দেশবিরোধী ঘৃণ্য অপতৎপরতার কথা জানেন তারা নিশ্চয় তখনকার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ জমা করে রেখেছেন। কারণ প্রথম আলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক হিসাব-নিকাশ এখনো বাকি রয়ে গেছে।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫