ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

‘কালি’র চেয়ে ‘বাংলালিংক’ তরমুজের চাহিদা বেশি

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৬
‘কালি’র চেয়ে ‘বাংলালিংক’ তরমুজের চাহিদা বেশি ছবি: কাশেম হারুন - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তরমুজের নাম কালি ও বাংলালিংক। শুনতে খটকা লাগলেও পাইকারি বাজারে এসব নামেই হরমামেশা বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।

তরমুজ চাষিরা আড়তে এসে পাইকারদের সঙ্গে বাংলালিংক, কালি নাম নিয়ে তরমুজের দরদাম ঠিক করছেন।

 

সোমবার (০৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে রাজধানীর ফলের পাইকারী বাজার শ্যামবাজারে গিয়ে এমনটাই শোনা যায়।

তরমুজের বাহিরের অংশ সবুজ রঙের হলেও ভেতরটা দেখতে লাল টুকটুকে। এই লাল টুকটুকে অংশের উপরিভাগ দেখতে দানার মতো। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও ঠিক তেমনি সুস্বাদু। নাম তার ‘বাংলালিংক’ তরমুজ। বাজারে চাহিদাও বেশি এই তরমুজের।

আর কালো রঙের তরমুজের নাম দেয়া হয়েছে ‘কালি’।

রাত ২টার দিকে রাজধানীর ফল বাজার খ্যাত শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, অনেক চাষি তরমুজ বিক্রি করে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমিয়ে পরেছেন। কেউ কেউ বা ভালো দামের আশায় ঘুরছেন বিভিন্ন আড়ৎ।

সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ আড়তে বাংলালিংকসহ কালো রঙের তরমুজ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। খুচরা ক্রেতাদের অপেক্ষায় রয়েছেন আড়তদারেরা। চাষিদের অনেকেই আড়তে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

তবে দাম নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে চাষি ও ক্রেতাদের মধ্যে। পাইকারি বাজারে একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৮০ টাকায়।

ফলে খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে তরমুজ বিক্রি হলেও চাষিদের তেমন লাভ হচ্ছে না। অপরদিকে ক্রেতাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে এসব তরমুজ।

ওই বাজারের আড়ৎদার লোকমান বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে বাংলালিংক জাতের তরমুজের চাহিদা বেশি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই বাজারে চাষিরা তরমুজ নিয়ে পাইকারি দরে বিক্রি করেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে তিন ধরনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের কালো রঙের তরমুজের নাম ‘কালি’। পাইকারি বাজারে ১শ’ কালি তরমুজের দাম দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। আকারভেদে ১০০ বাংলালিংক তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে নয় হাজার টাকায়।

এছাড়া হালকা সবুজ রঙের তরমুজের দামও বাংলালিংকের মতোই। অবশ্য সরবরাহ এবং চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বাজারে তরমুজের দাম ওঠানামা করে।

তবে গত দুইদিনের বৃষ্টিতে তরমুজ চাষিদের মুখের হাসির রেখায় কিছুটা ভাটাও পরেছে।

ব্যবসায়ী লোকমান বলেন, গতকাল একজন চাষি চার লাখ টাকার তরমুজ দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে গেছেন। এরকম একাধিক চাষি লোকসানে পরেছেন।

বরিশালের লালমোহন উপজেলার তরমুজ চাষি রফিকুল বাংলানিউজকে জানান, তরমুজের ফলন এবার বেশ ভালো হয়েছে। তিনিসহ অনেকেই ভালো আয়ও করেছেন। অবশ্য তরমুজের শেষ মুহুর্তে বৃষ্টির কবলে পরে অনেকেই লোকসানের বোঝা বইতে হবে।

খুচরা বাজারে প্রতিটি তরমুজ পাইকারি দরের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রির কারণ হিসেবে জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা অসীম সাহা বাংলানিউজকে জানান, পাইকারী বাজার থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে আসার পর কয়েকখাতে খরচ হয়। এ কারণে একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।

সোমবার বিকেলে মহাখালী কাঁচাবাজার থেকে তরমুজ কিনে বাড়ি ফেরার পথে নূর আলম জানান, চাষি ও পাইকারের‍ ভাষ্যমতে তরমুজের দাম খুব বেশি না। কিন্তু খুচরা বাজারে ঠিকই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও খুচরা বাজারে আকার ভেদে আড়াইশ টাকা করে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৬
একে/এএটি/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।