ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কিশোরগঞ্জের ‘মাছের ভাণ্ডার’ খায়রুল

টিটু দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৬
কিশোরগঞ্জের ‘মাছের ভাণ্ডার’ খায়রুল

কিশোরগঞ্জ: মাছ উৎপাদনের ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন কিশোরগঞ্জের খায়রুল ইসলাম।

ইতোমধ্যে মৎস্য উৎপাদনে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয় মৎস্য পুরস্কার-২০১৬ রৌপ্যপদক পেয়েছেন তিনি।


 
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের ভাটগাঁও গ্রামে প্রায় ৪০ একর জমিতে ১৩টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন খায়রুল ইসলাম। তিনি কিছুদিন ধরে আবার একটি হ্যাচারির মাধ্যমে মাছ উৎপাদন করছেন। তার ফিশারি থেকে প্রতি বছর ১৮০-২৫০ টন মাছ কিশোরগঞ্জ সদরসহ ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে বিক্রি করেন।

বর্তমানে খায়রুলের অধীনে কাজ করছেন ৪০ জন কর্মী। তার কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে মাছ চাষ করতে শুরু করেছেন আশেপাশের এলাকার প্রায় ১২ যুবক। তাদের মধ্যে সুমন মিয়া বর্তমানে ১৫ একর জায়গায় মাছ চাষ করছেন।
    
গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খায়রুলের জীবনের গল্পটা অন্যসব মাছ চাষিদের মতো নয়। ১৯৯৬ সালে সাড়ে সাত একর জমিতে বাবা মর্তুজ আলীর গড়া ফিশারি লোকসানে পড়ে। তখন ওই ফিশারি বিক্রির হাত থেকে বাঁচিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন খায়রুল। ওই সময় খায়রুল নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতেন। লেখাপড়ার ক্ষতি হবে ভেবে বাবা মতুর্জ আলী ও মা রেহেনা আক্তার মাছ চাষ করতে বাধাঁ দেয়। কিন্তু খায়রুল নিজের মনোবল নিয়ে ফিশারিতে মাছ চাষের পাশাপাশি ফিশারিতেই শুরু করেন রাত্রিযাপন ও বইপত্র নিয়ে লেখাপড়া। এভাবেই খায়রুল মাছ আর ফিশারির মধ্যে থেকেই গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি খায়রুলের মাছ চাষের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে পুরো কিশোরগঞ্জে।

খায়রুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমার ফিশারিতে বর্তমানে কার্প, তেলাপিয়া, শিং, মাগুর, পাবদা, গুলশা ও কৈ মাছ চাষ করি। মাছ চাষ করে জাতীয় পুরস্কার পাবো, তাও আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পদক নেওয়ার কথা কল্পনাও করতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন, আমাকে মৎস্য উৎপাদনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।

বর্তমানের কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাছ চাষিরা খায়রুলের কাছ থেকে পরামর্শ, মাছের পোনা ও মাছের খাবার সংগ্রহ করেন।    

বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় এক কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। সরকারিভাবে ঋণের ব্যাপারে সহযোগিতা পেলে আরো বড় পরিসরে মাছ উৎপাদন করতে পারবো, আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কিশোরগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, খায়রুলকে কিশোরগঞ্জের মাছের ভাণ্ডার বলা চলে। আর খায়রুল তরুণ মাছ চাষিদের আইকন। বর্তমানে খায়রুল প্রায় ৪৫ জন যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। খায়রুল এবং আমাদের চেষ্টায় দিন দিন কিশোরগঞ্জে মাছ চাষিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ৬০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৬
এসআই/জেডএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।