ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আমন বীজ সংকটের শঙ্কা

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
আমন বীজ সংকটের শঙ্কা জলাবদ্ধতায় ডুবে রয়েছে আমনের চারা

মধুপুর(টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের মধুপুরের বিএডিসি’র বীজ উৎপাদন খামারের ৪০ একর জমির লাগানো আমন ফসল পানির নিচে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রস্তুত থাকা আরও ৩৭ একরে চারা লাগানোই সম্ভব হয়নি।

এবারের অনিয়মিত ও কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি এবং দীর্ঘ স্থায়ী বন্যার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আগাম আমন ভিত্তি বীজ উৎপাদন নিয়ে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়েছে।

এতে আগামী আমন উৎপাদনে বীজ সংকটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএডিসি) দেশের অন্যতম বৃহৎ মধুপুরের কাকরাইদে বীজ উৎপাদন খামারের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা জাতের ধান ও ফসলের বীজ উৎপাদনের কাজ করে। চলতি আমন মৌসুমে খামারের ১৯২ একর জমিতে আমন বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় বীজতলা তৈরিসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হয়।

বিএডিসি সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১ম বার ১৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই, ২য় বার ১০ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট, ৩য় বার ২০ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট এবং ৪র্থ বার ২৬ আগস্ট থেকে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রায়শই টানা ভারি বৃষ্টিপাতে মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারের আমন মৌসুমে রোপিত জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। যেখানে রোপণকৃত ৪০ একর জমি বিনষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অবশিষ্ট আমন রোপণ ও রোপণ পরবর্তী কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মধুপুর বীজ উৎপাদন খামারের রোপণকৃত জমির প্রায় ১১৬ একর বীজ ফসল অতিরিক্ত পানি থাকা সত্ত্বেও টিকে রয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে বীজ ফসল পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।

জলাবদ্ধতায় ডুবে রয়েছে আমনের চারাঅন্যদিকে মধুপুর উপজেলার প্রায় দুই সহস্রাধিক হেক্টর কৃষি জমিতে বন্যার জলাবদ্ধতায় চাষিদের রোপণকৃত আমন ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে বলেও কৃষি বিভাগের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিএডিসি খামার ও খামারের আশপাশে ঊঁচু এলাকার প্লাবিত বৃষ্টির পানি ওই খামারে ভেতর দিয়ে প্রবাহিত গোজা খালে নেমে খামার পার্শ্ববর্তী বংশাই নদীতে প্রবাহিত হয়। টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়ে খামারের খালসহ আশপাশে অন্যান্য খালের পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলে জলাবদ্ধতার কারণে নিমজ্জিত জমিতে পানির পরিমাণ ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত ছিল। পানি না নেমে বর্তমানে অনেকটা স্থির অবস্থায় রয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি নেমে গেলে বীজতলার ৫০/৬০ দিন বয়সী চারা রোপণ করা হয়তো সম্ভব হবে। অন্যথায় পানি নেমে যাওয়ার পর নাবী জাতসমূহ যেমন- বিআর-২৩, ব্রিধান-৩৪ ও বিনাশাইল রোপণের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫ বছর আগে ২০১১-১২ অর্থ বছরে একই রকম সমস্যায় নেরিকা ছিটিয়ে কোনোরকম লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত প্রায়শই বৃষ্টি থাকায় জলাবদ্ধতা কমছে না। জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই বললেই চলে। এ অবস্থা বিরাজ করলে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলে বীজ উৎপাদনে খামারটির প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হবে। পাশাপাশি দেশের সার্বিক বীজ চাহিদার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

বীজ উৎপাদন খামারের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সঞ্জয় রায় এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ সংকট উত্তরণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।