ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

বোরো ধানের দাম নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা

মাহিদুল ইসলাম রিপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৮
বোরো ধানের দাম নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা ধান সংগ্রহ করছেন চাষিরা। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দীর্ঘবছর ধরে সরকার ধানের মূল্য নির্ধারণ করে সরাসরি ক্রয়ের ঘোষণা দিলেও কৃষকের এই সুবিধা ভোগ করে আসছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা। প্রতিবছরের মতো এবারও সরকার চলতি বোরো মৌসুমের ধান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

এবার গতবছরের চেয়ে প্রতিকেজি ধানের মূল্যে দুই টাকা ও চালের মূল্যে চার টাকা বেড়েছে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমের খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও অভিযানে প্রতিকেজি ধানের দুই টাকা বেড়ে ২৬ টাকা ও চালের চার টাকা বেড়ে ৩৮ টাকা দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। নির্ধারিত এই মূল্যে সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে চলতি বোরো মৌসুমের ফসল সংগ্রহ করবেন। তবে এবার কৃষি বিভাগের সরবরাহ করা কৃষককার্ডের মাধ্যমে ফসল সংগ্রহ করা হবে বলে খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়। ক্ষেতে ধান কাটছেন চাষিরা।  ছবি: বাংলানিউজচিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ পলাশবাড়ীর কৃষক মো. সানাউল্লাহ আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবার সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয়ের ঘোষণা দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করে। সরকার কৃষকদের ন্যায্য মূল্য দিতে চাইলেও চাষি তা পায় না। অসাধু চক্র ও রাজনৈতিক নেতাদের কারণে কৃষক সরাসরি সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারে না। তারা বিভিন্ন নামে-বেনামে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করেন।

কৃষক সানাউল্লাহ আরও জানান, জমিতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে নেওয়া পর্যন্ত প্রতিকেজি ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ গুনতে হয় গড়ে ২০ থেকে ২১ টাকা। উৎপাদিত এই ফসল সরাসরি সরকারের ঘরে দিলে কৃষক পাবে তার ন্যায্য মূল্য। এবার ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। সরকার যদি সরাসরি ধান বিক্রির সুযোগ করে দেয় তাহলে কৃষকরা গতবন্যায় হয়ে যাওয়া ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠবেন।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, এবার জেলার ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩শ’৯ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চাষাবাদে ২ হাজার ৬৭৪ হেক্টর বেড়ে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯শ’ ৮৭ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ৪ দশমিক ৭৫ থেকে ৫ দশমিক মেট্রিক টন ধান লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯শ’ ৮৭ হেক্টর জমিতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৬ মেট্রিক টন ধান। বর্তমানে বোরোক্ষেতে সোনালি ধান দেখা দিয়েছে। চারা রোপণ থেকে আগামী ধান উৎপাদন পর্যন্ত কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের সুবিধা দেবে। ধানক্ষেত।  ছবি: বাংলানিউজকৃষকের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিয়ে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. কাওসার আলী বাংলানিউজকে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহ ও অভিযানে প্রতিকেজি চালে চার ও ধানে দুই টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। সরকারি নির্ধারিত মূল্যেই কৃষকরা সরাসরি ধান বিক্রি করতে পারবেন।

এবার ধান সংগ্রহ ও অভিযানে কোনো অসাধু চক্র যেন সুযোগ না পায় এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে সরবরাহ করা কৃষক কার্ডের মাধ্যমে ক্রয় করা হবে। সংগ্রহ ও অভিযানে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।