ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

রাজধানীতে বিষমুক্ত শাকসবজি নিয়ে চালু হলো ‘কৃষকের বাজার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৯
রাজধানীতে বিষমুক্ত শাকসবজি নিয়ে চালু হলো ‘কৃষকের বাজার’

ঢাকা: কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সার ও কীটনাশকমুক্ত শাকসবজি ও দানাদার শস্যের যোগান দিতে রাজধানীতে যাত্রা শুরু করেছে ‘কৃষকের বাজার’। 

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) মানিক মিয়া এভিনিউ’র সেচ ভবন প্রাঙ্গণে উদ্বোধন হয় এ বাজারের। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে শুক্র ও শনি দুদিন সকাল ৭টা থেকে বসবে এ বাজার।

আজ বাজারের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।  

বাজার উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখানকার এই কৃষকের বাজারে যে কৃষকরা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের আমরা গত এক বছর ধরে প্রস্তুত করেছি। সম্পূর্ণরূপে কীটনাশকমুক্ত সবজি এখানে নিয়ে আসছেন তারা। স্বল্প পরিসরে হলেও এটি অব্যাহত থাকবে, এবং ভবিষ্যতে এটি বৃহৎ পরিসরে করার উদ্যোগ আমরা নেবো।  

কৃষিখাতে বাংলাদেশের আরও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলে, দানা জাতীয় খাদ্যের ক্ষেত্রে আমরা এখন উদ্বৃত্ত অবস্থায় আছি। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের শাকসবজি, খাদ্য ও কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। এটি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। গত অর্থবছরে কৃষিক্ষেত্রে রপ্তানির অগ্রগতি হয়েছে ৩৪ ভাগ। অন্যান্য সব সেক্টরের চেয়ে কৃষি সেক্টরে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।  

ঢাকার আশপাশের মোট আটটি উপজেলা থেকে অর্গানিক বিভিন্ন সবজি নিয়ে এ বাজারে অংশগ্রহণ করেছেন কৃষকরা। প্রথমবার তাদের পরিবহন খরচ সরকার বহন করে। পরবর্তীতে কৃষকরা নিজে উদ্যোগেই এখানে সবজি নিয়ে আসবেন।  

এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছেন ক্রেতারা। কীটনাশকমুক্ত সবজির নিশ্চয়তা পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বেসরকারি চাকরিজীবী সৈয়দ আতিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রথমত ভালো লাগছে যে, এখানে সরাসরি কৃষকরা দাম পাচ্ছে। দ্বিতীয়ত শাকসবজিগুলো সম্পূর্ণ কীটনাশকমুক্ত। তাই একসঙ্গে অনেক কিনে নিচ্ছি।  

তবে এ বাজারে বিভিন্ন পণ্যে দামের আধিক্য রয়েছে বলেও অভিযোগ কোনো কোনো ক্রেতার।  

এ ব্যাপারে রাজধানীর খামারবাড়ির বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবী নাসিমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাইরের বাজার থেকে এখানে প্রতিটি পণ্যে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেশি। যেহেতু পরিবহন খরচ নেই, সেহেতু কৃষকরা আরও কম দামে এগুলো বিক্রি করতে পারেন। এ বিষয়টি আয়োজকদের লক্ষ্য রাখা উচিত ছিল।  

এদিকে এ ধরনের অভিযোগের উত্তরে সাভারের ধামরাই থেকে আগত কৃষক সিরাজুল ইসলাম মিয়া বলেন, বাজারে ফুলকপি পাওয়া যায়, আমাদের এখানেও ফুলকপি আছে। কিন্তু এই দুই ফুলকপির মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমরা সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে চাষ করি। এ ধরনের ফসলের বীজ সব জায়গায় পাওয়া যায় না। নির্ধারিত কিছু কিছু জায়গায় পাওয়া যায়, যার দাম সাধারণত বেশি। তাছাড়া আমরা কোনোরূপ কীটনাশক ব্যবহার করি না। দৈনন্দিন আবর্জনা থেকে তৈরি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করি। এক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণসহ ফসলকে পোকামাকড়মুক্ত রাখতে অনেক শ্রম ও খরচ হয়। তাই আমাদের দামটা একটু বেশি। যেমন, একটি ফুলকপির পেছনে খরচ হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা। আমরা সেটা বিক্রি করছি ৪০ টাকায়।

বিক্রিবাটতা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জ থেকে আগত কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিক্রি ভালো হয়েছে। যা সবজি নিয়ে এসেছিলাম তার সবই বিক্রি হয়ে গেছে। এতো তাড়াতাড়ি সব বিক্রি হয়ে যাবে ভাবিনি। প্রতি শুক্র, শনিবার এ বাজার চলবে, আমরাও নিয়মিত এখানে সবজি নিয়ে আসব।  

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএডিসির চেয়ারম্যান মো সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্ট ড. সিমপন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৯
এমএএম/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।