ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সবজি বীজতলায় ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২০
সবজি বীজতলায় ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের সবজি বীজতলায় ব্যস্ত চাষি। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: বগুড়ায় রবি মৌসুমের শীতকালীন আগাম সবজি চাষাবাদ শুরু করেছেন চাষিরা। এখন সবজি বীজতলায় চারা তৈরি, বিক্রি ও পরিচর্যা করতে ব্যস্ত নার্সারিগুলো।

জমি ফাঁকা হতেই নতুন সবজি চাষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাষিরা।

সরেজমিনে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া, মোস্তইল, শাহানগর, সদর উপজেলার মহাস্থানসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে নতুন নতুন সবজির বীজতলা নিয়ে চাষিদের এমন কর্মব্যস্ততার দৃশ্য দেখা যায়।  

সারা বেলা চাষিদের নানামুখী কাজের আড্ডা এসব সবজি বীজতলা নিয়ে। কাকডাকা ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন বীজতলায়। কাঁচি, কোদাল, পাচুনসহ (স্থানীয় ভাষায়) আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি নিয়ে নেমে পড়ছেন জমিতে। কেউ কেউ প্রস্তুত করা জমিতে রোপণ করছেন বীজ। অনেকেই ব্যস্ত বীজতলা পরিচর্যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বীজতলা প্রস্তুতের পর জমির মাঝ বরাবর নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে ছোট ছোট আইল তৈরি করে বীজ রোপণ করা হয়েছে। এরপর বাঁশের তৈরি ‘বেতি’গুলো রিংয়ের মতো বসিয়ে উপরে পলিথিন দিয়ে পুরো বীজতলা মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সবজি বীজতলা।  ছবি: বাংলানিউজএ ব্যপারে চাষি সামছুল হক, লাল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, গরম পরিবেশ সৃষ্টি করতেই এমনটা করা হয়েছে। মাঝে মাঝে ঢেকে দেওয়া পলিথিনগুলো সামান্য উঠিয়ে এক পাশ ফাঁকা করে দেওয়া হয়। যেন বাইরের বাতাস বীজতলায় প্রবেশ করতে পারে। বীজ রোপণ থেকে শুরু করে প্রথম এক সপ্তাহের মতো এ কার্যক্রম চলে। বীজ গজিয়ে ওঠার পর চাষিরা সেই পলিথিনগুলো সরিয়ে ফেলেন। এরপর বিক্রির আগ পর্যন্ত নিয়মিত চলে পরিচর্যা। পুরুষের পাশাপাশি এ কাজে নারীদেরও দেখা মেলে। সকাল থেকে সারাদিন বীজতলায় ব্যস্ত সময় কাটান চাষিরা।

আনিছ আলী, ইব্রাহিম মোল্লা, লতিল মিয়াসহ একাধিক চাষি বাংলানিউজকে জানান, বছরের ৬ মাস নার্সারিতে ব্যবসা চলে। শাজাহানপুর উপজেলায় কমপক্ষে শতাধিক সবজি নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে নানা জাতের সবজি বীজ উৎপাদন করা হয়। এসব নার্সারিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটো, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, গাজর, পটল, শিম, বরবটি, পালং শাক, লাল শাক, ঝিঙ্গা, করলাসহ বিভিন্ন জাতের সবজির চারা গাছ পাওয়া যায়।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি এক হাজার পিস ফুলকপির চারা ৭শ থেকে ৮শ, বাঁধাকপির চারা ৫শ, মরিচের চারা ৬শ থেকে ৭শ, টমেটোর চারা ৭শ থেকে ৮শ, বেগুনের চারা ৫শ, পেঁয়াজের চারা মণ ১৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বীজতলায় ব্যস্ত চাষি।  ছবি: বাংলানিউজবগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গেল বছর রবি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১২ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছরের টার্গেট এখনো পূরণ হয়নি। তবে গেল বছরের তুলনায় কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।

তিনি জানান, জেলার চাষিরা মূলত আগস্টের মধ্যবর্তী সময় থেকেই জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি লাগানো শুরু করে। বগুড়ার শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, সদর, গাবতলী ও কাহালু উপজেলায় চাষিরা প্রায় ৩০-৩৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে নার্সারি আকারে নানা জাতের সবজি বীজতলা তৈরি করেছেন। আর বীজতলার এসব চারা দিয়ে ২০-২২ গুণ জমি চাষ করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২০
কেইউএ/এইচএডি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।