নওগাঁ: উত্তরাঞ্চল জুড়ে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার ব্যস্ততা। ঘরে উঠছে ধান, তবে খুশি নেই কৃষকের মনে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলিত মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় বোরো চাষ হয়েছে ৮ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে নওগাঁ জেলায় ১ লক্ষ ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বোরোর আবাদ।
মহাদেবপুর উপজেলার এনামুল হক নামে একজন কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, প্রকৃতির বৈরিতা চলছে বেশকিছু দিন ধরে। পরপর ৪ দফায় বৈশাখী তাণ্ডব চলেছে মাঠগুলোতে। ফলে গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ায় চাল আসেনি অনেক ধানে। আবার কিছু ধান পানিতে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বছর ফলন হবে অনেক কম। গেলো বছরগুলোতে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫-২৮ মণ ধান পাওয়া গেছে। এ বছর ১৮-২০ মণ ধান পাওয়া কঠিন। এরপর আবার পানিতে অনেক ধান নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্যে আছি।
তিনি আরও জানান, একদিকে মাঠের পর মাঠ ধান পড়ে আসে কিন্তু কাটার মতো শ্রমিক নেই। অল্প কিছু শ্রমিক কাজ করছে। তারপর তাদের কাজ করাতে হচ্ছে উচ্চ মূল্য দিয়ে। গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে কাটতে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা, এ বছর লাগছে ৬-৭ হাজার টাকা। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
সদর উপজেলার কীর্তিপুর গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর সবদিক দিয়ে কৃষকের লোকশান। একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে ভিজা ধান। ফলে বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ কৃষকের ধান কেউ কিনছে না। এসব ধান নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে আমাদের। এখন সরকারিভাবে যদি ধান সংগ্রহ করা হয় তাহলে কৃষক কিছুটা রেহাই পাবে।
নওগাঁর মিল মালিক শেখ ফরিদ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে বাজারে আসা ধানে আদ্রতা ও চিটার পরিমাণ অনেক বেশি। পাশাপাশি ধানগুলো ভেজার পরিমাণ অনেক। ফলে এসব ধান বেশি দামে কিনলে লোকশান গুনতে হবে আমাদের। তাই বাজারে ধানের দাম কিছুটা কম। তবে শুকনো ধানের দাম কিন্তু ঠিকই আছে।
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুখ হোসেন পাটওয়ারী বাংলানিউজকে জানান, এরইমধ্যে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সরকারের শুরু হওয়া ধান ক্রয় কার্যক্রম বেগবান হলেই বাজারে ধানের দাম বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২২
এনটি