ঢাকা, রবিবার, ১২ মাঘ ১৪৩১, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ রজব ১৪৪৬

কৃষি

কুয়াশা-শীতে উৎকণ্ঠায় রংপুরের আলুচাষিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
কুয়াশা-শীতে উৎকণ্ঠায় রংপুরের আলুচাষিরা আলুর ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

রংপুর: রংপুরসহ বিভাগজুড়ে গত কয়েকদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। কমছে তাপমাত্রাও।

এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে সূর্যের কিরণ না থাকায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চলমান এই শীতে কৃষিখাতে প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তারা বলছেন, বর্তমানে আলুর মৌসুম চলছে। এ সময়ে ফসলের পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তারা শঙ্কিত লেট ব্লাইট রোগ নিয়ে। কারণে ওষুধ স্প্রে খরচও বেড়েছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, শীতে বড় ধরনের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে নানাবিধ পরামর্শ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত আলুর ক্ষেতগুলোর অবস্থা ভালো আছে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, তপোধন, দর্শনা, তামপাট ও পীরগাছার নব্দীগঞ্জ, দেউতি, পারুল, কান্দিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা শৈত্যপ্রবাহে ধকল নেমেছে আলুর ক্ষেতে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে যুদ্ধ করে এখনও ভরা আলুর মাঠে ওষুধ স্প্রে করে চলছেন কৃষকরা। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার চড়া দামের বালাইনাশক ওষুধ ছিটিয়েও আলু টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না আলু বলে অভিযোগ কৃষকদের। এতে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কৃষকরা বলছেন, এই শীতের কারণে লোকসানে পড়েছে কৃষক ও কৃষি নির্ভর পরিবারগুলো। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি কাজ। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। শীতের কারণে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না, যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের দিতে হচ্ছে বেশি টাকা। এতে সার, বীজ ও সেচের সঙ্গে কৃষি শ্রমিকের মজুরিতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। সব মিলিয়ে এবার তারা আলু চাষ নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

পীরগাছা উপজেলার পারুল আর্দশ নদীর পাড় এলাকার ফুল মিয়া ও শাহ আলম নামের দুই চাষি বলেন, আবহাওয়া যদি এমন থাকে, আলুর ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দিনভর গাছ কুয়াশায় ভিজে থাকছে। এ অবস্থায় ওষুধ স্প্রে করার কোনো উপায় নেই। তারপরেও ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে।

নগরীর কেরানিরহাট এলাকার চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, অব্যাহত শীত ও কুয়াশার কারণে আলুসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। দ্রুত এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তিনিসহ অনেক চাষি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপ-পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানিয়েছেন, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট কৃষি অঞ্চলে আলু রোপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু রংপুর জেলায় ৫৩ হাজার ৯৩০ হেক্টরে আলু চাষ হয়েছে।

তিনি বলেন, শীতে আলুর লেটব্লাইড ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত আলুর ক্ষেতগুলোর অবস্থা ভালো আছে। আশা করছি, উৎপাদনে এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। ’

রংপুরের আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মুস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, আগামী দুই-তিন দিন এমন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।