ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ডুবে যাওয়া ধানের শীষ কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
ডুবে যাওয়া ধানের শীষ কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা

নীলফামারী: নীলফামারীতে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান। কোনো ক্ষেতে কোমর পানি, আবার কোনো ক্ষেতে বুক ছুঁই ছুঁই পানি।

ধান গাছের গোড়া থেকে কাটতে হলে ডুবে ডুবে কাটতে হবে। যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। তাই উপায় না দেখে গোড়া না কেটে শুধু ধানের শীষটুকু কেটে নিচ্ছেন কৃষক-শ্রমিকরা।  

এতেও আছে কিছু সমস্যা। গোছা গোছা ধানের গোড়া কাটা যতটা সহজ, গুছিয়ে ধানের শীষ কাটা ততটা সহজ নয়। যেসব কৃষক শ্রমিকদের দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন, এজন্য বাড়তি মজুরিও গুণতে হচ্ছে তাদের।  

জেলার বুড়ি তিস্তা, নদী সংলগ্ন ও নিচু এলাকার ডুবে থাকা ধান এভাবেই কাটা হচ্ছে।

জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুরে এবার গ্রীষ্মে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। নদী-নালা পানিতে ভরে গেছে। উঠতি বোরো ধান কোথাও পুরোটা কোথাও অর্ধেটা পানিতে ডুবে আছে। সেই পানি এখন আস্তে আস্তে নামতে শুরু করেছে। ফলে কৃষকরা বাড়তি মজুরি দিয়ে ধান কাটাতে শুরু করেছেন।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক কার্তিক চন্দ্র বলেন, আমার পাঁচ বিঘা জমির ধান প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে ধানের কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। যেসব ধানের মাথা বের হয়েছে, সেগুলো শ্রমিক দিয়ে কাটাচ্ছি। জমিতে পানি না থাকলে বিঘা প্রতি ছয় হাজার টাকা দিতে হতো শ্রমিকদের। কিন্তু ক্ষেতে পানি থাকায় শ্রমিকদের প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে আট হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে। এজন্য প্রায় আট মণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।  

জেলার বুড়ি তিস্তা নদী এলাকার কৃষক শাহিনূর রহমান বলেন, আমি ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। ভাতের জন্য দুই বিঘা জমি বর্গা চাষ করি। ধান পাকার সময় প্রবল বৃষ্টিতে নদী ভরে যায়। সেই সঙ্গে আমার জমির ধানও পানিতে তলিয়ে যায়। এসব ধান পানি সহ্য করতে পারে না। তাই উঠতি বোরো ধানের বেশিরভাগ নষ্ট হয়েছে।  

একই কথা বললেন ডিমলার তিস্তা নদী এলাকার সমসের আলী, আবেদ আলীসহ অনেক কৃষক।  

এ প্রসঙ্গে নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবু ছিদ্দিক জানান, বোরো মৌসুমে ৮১ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এজন্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৬৪ মেট্রিক টন ধান।  

তিনি বলেন, এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধান কাটার সময় এ ধরনের ক্ষতি কৃষকদের ধাক্কায় ফেলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।