ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

নানা আয়োজনে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহকে স্মরণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৪
নানা আয়োজনে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহকে স্মরণ

বাগেরহাট: বাগেরহাটে নানা আয়োজনে তারুণ্যের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে শুক্রবার (২১ জুন) সকালে কবির গ্রামের বাড়ি মোংলার মিঠাখালী বাজার থেকে একটি শোক র‍্যালি বের করা হয়, যা কবির সমাধিস্থলে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর রুদ্রের বাড়িতে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।  

পরে বেলা ১১টায় রুদ্রের বাড়িতে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও রুদ্রের অনুজ সুমেল সারাফাত। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার। সভায় আরও বক্তব্য দেন মিঠাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতি মাহামুদ হাসান ছোটমনি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার সভাপতি নূর আলম, চালনা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, রামপাল সরকারি কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম প্রমুখ ।

আলোচনা শেষে রুদ্রের গান পরিবেশন করেন রুদ্রের গড়া সংগঠন অন্তর বাজাও।

সভায় বক্তারা বলেন, রুদ্র ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সব বৈষম্য, সাম্প্রদায়িকতা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। বুদ্ধিবৃত্তিক আপোষকামিতায় দেশ যখন আকণ্ঠ নিমজ্জিত, সত্য যখন নির্বাসনে; এই রকম অস্থির সময়ে রুদ্রকে আমাদের নিজেদের জন্য, দেশের জন্য খুব প্রয়োজন ছিল। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন রুদ্র তার কবিতা ও গানে বেঁচে থাকবেন।  

মাত্র ৩৫ বছরের জীবন-সীমায় রুদ্র রচনা করেন সাতটি কাব্যগ্রন্থ-‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯), ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১), ‘মানুষের মানচিত্র’(১৯৮৪), ‘ছোবল’ (১৯৮৭),  ‘গল্প’ (১৯৮৭), ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’ (১৯৮৮) এবং ‘মৌলিক মুখোশ’(১৯৯০)।  

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এছাড়া তিনি বেশ কিছু গল্প লিখেছেন।  

তার রচিত ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’- গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়। ১৯৮৭ সালে আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসনিনের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মোংলায় বসে তিনি এ গানটি রচনা ও সুরারোপ করেন। এ গানটির জন্য ১৯৯৭ সালে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন।  

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চলতি বছর তিনি একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত হন।

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মারা যান এ কবি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৪
এইচএ্

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।