ঢাকা, বুধবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মহাকবি কায়কোবাদের ১৬৮তম জন্মজয়ন্তী আজ

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫
মহাকবি কায়কোবাদের ১৬৮তম জন্মজয়ন্তী আজ মহাকবি কায়কোবাদ

নবাবগঞ্জ (ঢাকা): ‘কে ওই শোনালো মোরে আযানের ধ্বনি, মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিলো কি সুমধুর, আকুল হইলো প্রাণ, নাচিলো ধমনি। কি মধুর আযানের ধ্বনি’।

সেই বিখ্যাত ‘আযান’ কবিতার রচয়িতা মহাকবি কায়কোবাদের ১৬৮তম জন্মজয়ন্তী মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি)।

মহাশ্মশান প্রণেতা এ কবি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

কবির জন্মজয়ন্তীতে মঙ্গলবার সকালে ‘মহাকবি কায়কোবাদ স্মৃতি সংসদ’ এর পক্ষ থেকে কবির সমাধিস্থল ঢাকার আজিমপুর পুরোনো কবরস্থানে কবর জিয়ারত করা হবে। এছাড়া এ বছর নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কবির জন্মদিনে আলোচনা সভা ও কবিতা আবৃত্তির আয়োজন করেছে ‘কায়কোবাদ ডট কম’ কায়কোবাদকে জানুন সংগঠনটি।

‘মহাকবি কায়কোবাদ স্মৃতি সংসদের সদস্য, ইতালি প্রবাসী বিষ্ণুপদ সাহা বলেন, কবির এলাকায় আমার বাড়ি। তাই ছোটবেলা থেকে তার প্রতি আমার বিশেষ টান। প্রবাসে থাকলেও প্রতিবছরই কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী শ্রদ্ধার সঙ্গে পালনের চেষ্টা করি। সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর কবির স্মৃতির উদ্দেশে গুণিজন সম্মাননা ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।

কবি কায়কোবাদ ১৯০৪ সালে অমর কাব্যগ্রন্থ মহাশ্মশান লিখে মহাকবি উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। এ রকম অসংখ্য কবিতাসহ আধুনিক শুদ্ধ বাংলায় গীতিকাব্য, কাহিনি কাব্য, কাব্য উপন্যাস রচনা করে গেছেন তিনি। তিনি ছিলেন খাঁটি বাঙালি ও মুসলমান। ১৮৫৭ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৯৪ বছর পর্যন্ত তিনি এ পৃথিবীর মাঝে বেঁচে ছিলেন। জীবনের সুদীর্ঘ ৮২ বছরই তিনি বাংলা সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেছেন।  

কবি মাত্র ১২ বছর বয়সে প্রথম কাব্যগ্রন্থ বিরহ বিলাপ প্রকাশিত হয় ১৮৭০ সালে। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ কুসুম কাননে প্রকাশিত হয় ১৮৭৩ সালে। এ দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পর পরই তিনি কবি হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন। ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত হয় তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ অশ্রুমালা। এ অশ্রুমালা প্রকাশের পর থেকেই কায়কোবাদ সাহিত্য সমাজে প্রতিষ্ঠিত হন। কবি নবীন চন্দ্র সেন, সম্পাদক বঙ্গবাসী, ঢাকা গেজেট ও কলকাতা গেজেট অশ্রুমালায় ভূয়সী প্রশংসা করেন।  

এরপর তিনি শিব মন্দির, অমিয় ধারা, মহরম শরীফ বা আত্মবিসর্জন কাব্য, শ্মশান ভষ্ম তার জীবদ্দশায় এসব গ্রন্থ প্রকাশ হয়ে থাকে। কবির মৃত্যুর পর প্রকাশ হয় প্রেমের ফুল, প্রেমের রানী, প্রেম পারিজাত, মন্দাকিনী ধারা ও গাউছ পাকের প্রেমের কুঞ্জ। এমনিভাবে কবির মোট ১৩টি কাব্যগ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে উপহার রেখে গেছেন।  

কথিত আছে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর কবির বেশ কিছু পাণ্ডুলিপি তার বংশধরদের মধ্য থেকে হাতছাড়া হয়ে যায়। তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব হয়নি। ফিরে পাওয়া গেলে হয়তো বা নিশ্চয়ই বাংলা সাহিত্যের জন্য বাংলা ভাষাভাষী বাঙালি জাতির জন্য অনেক উপকারে আসতো।

মহাকবি ১৯৫১ সালে ২১ জুলাই বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পুরাতন আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।