ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (পর্ব ২১)

ধারাবাহিক রচনা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
ঔপনিবেশিক ভারতের বিলাতি নারীরা | আদনান সৈয়দ (পর্ব ২১)

পর্ব ২০ পড়তে ক্লিক করুন

বিলাতি মেমদের বিয়ে শাদি |
র দশটা সমাজের মতো বিলাতি সমাজেও বিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ভারতে পা রাখার প্রথম দিকের দিনগুলিতে একজন বিলাতি খুব সহজেই বিয়ে করার জন্য আরেকজন বিলাতি পাত্র-পাত্রী খুঁজে পেতেন না।

সেই আকালের দিনে বিলাতি পুরুষরা বন্দরে গিয়ে তীর্থের কাকের মতো মুখ হা করে চেয়ে থাকতেন এই আশায়, যদি কোনো বিলাতি নারী ভারতের মাটিতে পা রাখেন! এ নিয়ে বিলাতি পুরুষদের মধ্যে একধরনের প্রতিযোগিতাও শুরু হয়ে যেত। কার আগে কে ‘বুকিং’ দিতে পারে! বলার অপেক্ষা রাখে না, এই প্রতিযোগিতায় বিলাতি উচ্চ শ্রেণীর সেনা কর্মকর্তাদেরই জয় হতো। সে কারণে নিরুপায় হয়ে সাধারণ পেশার বিলাতি পুরুষরা ভারতীয় নারীদের দিকেই ঝুঁকে পড়ে। এ তথ্যটি তৎকালীন বিলাতি শাসকমহলেও অজানা ছিল না। ১৮৫০ সালের দিকে বিলাতি সরকার এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করল, যেসব বিলাতি পুরুষ গ্রামে-গঞ্জে এবং মফস্বলে কাজকর্ম করেন, তারাই ভারতীয় নারীদের বিয়ে করতে পারবেন। তবে সঙ্গী হিসেবে বিলাতি নারীরাই ছিল বিলাতি পুরুষদের প্রথম পছন্দ।



বিলাতি সমাজে বিলাতি নারীদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ দেখে ১৮৩০ সালে ভিক্টর জেকমন্ট নামের এক ফরাসী নারী মন্তব্য করেছিলেন, “ভাগ্যিস, ফরাসী হয়েছিলাম। ঈশ্বর আমাকে ইংরেজ স্ত্রী হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। ” ভারতে অবস্থানরত বিলাতি নারীদের নিয়ে বিলাতি পুরুষ সমাজের একটা চাপা ভয়-উৎকণ্ঠা ছিল—এই বুঝি কোনো বিলাতি নারী ভারতীয় কারো প্রেমে পড়ে গেল! অথবা তাদের কন্যারা ভারতীয় সমাজে মিশে না জানি কত ভয়াবহ খারাপ কিছু শিখে ফেলল! তাই বিলাতি নারীরা যেন স্কুল বা অন্য কোথাও ভারতীয় ভাষা শিখতে না পারে, সেদিকে বিলাতি সমাজের নজর বেশ টনটনে ছিল



অনেক বিলাতি পুরুষই ভারতে এসে স্থানীয় কাউকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে দিত। এবং কিছুদিন পর বিলেত থেকে তাদের স্ত্রীরা ভারতে এলে এ নিয়ে সমস্য দেখা দিত। বিবাহিত বিলাতি স্ত্রীরা ভারতে এসে আবিস্কার করতেন, তাদের স্বামীরা ইতোমধ্যেই ভারতীয় নারীগামী হয়ে বেশ সুখেই জীবন যাপন করছে। অনেক বিলাতি নারীই এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন। বিলাতি নারী ইথেল সেভির কথা আপনারা আগেই জেনেছেন। তিনি বড় হয়েছেন মূলত কলকাতার বিভিন্ন শহর আর উপশহরে। ভারতের বিলাতি সমাজে বিলাতি মেমদের সামাজিক অবস্থান নিয়ে আঠার দশকের শুরুর দিকে তিনি বলেছেন, “বিলাতি নারী মানেই তাকে সেজেগুজে পিয়ানো নিয়ে বসে থাকতে হবে অথবা বিয়ের কথা ভাবতে হবে। ” ওই সময় হাতের কাজ, সুঁই দিয়ে কাপড়ে নকশা করা অথবা সেলাইয়ের কাজ জানা ছিল বিয়ের বাজারে বিলাতি মেমদের জন্য বাড়তি যোগ্যতা। অবশ্য পরবর্তীতে, ঊনিশ শতকের দিকে বিলাতি নারীরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে। পুরুষদের পাশাপাশি তারাও টেনিস, গল্‌ফ, ঘোড়াদৌড়—ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমান দক্ষতার পরিচয় দিতে শুরু করে।

ইথেল সেভির কন্যা ডোরার কথাই ধরা যাক। ভারতে বড় হয়েছেন। মায়ের মতো ঘরকুণো ছিলেন না, অন্য অনেক বিলাতি মেয়েদের মতো তিনিও ঘোড়াদৌড় আর টেনিস খেলায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, বিলাতি সমাজে নারীদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েই গিয়েছিল। ১৯২০ সালের একটি ঘটনা তৎকালীন বাস্তবতা বোঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। রুমার গডেন তখন অল্প বয়সী বালিকা। বীজগণিত, পাটিগণিত ও লেটিনসহ আরো কিছু বই-পুস্তক তার জন্য পাঠ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হলো। কিন্তু বাধ সাধলেন তার বাবা। কপাল কুঁচকে তিনি বললেন, “ননসেন্স! মেয়েদের এতসব পড়ার কী প্রয়োজন?” (ওমেন অব দ্য রাজ: দ্য মাদারস, ডটারস, ওয়াইভস অ্যান্ড ডটারস অব দ্য ব্রিটিশ এমপায়ার ইন ইন্ডিয়া। লেখক, মার্গারেট মেকমিলান, রেনডম হাউস ট্রেড, ২০০৫)।

বিলাতি সমাজে বিলাতি নারীদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ দেখে ১৮৩০ সালে ভিক্টর জেকমন্ট নামের এক ফরাসী নারী মন্তব্য করেছিলেন, “ভাগ্যিস, ফরাসী হয়েছিলাম। ঈশ্বর আমাকে ইংরেজ স্ত্রী হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। ” ভারতে অবস্থানরত বিলাতি নারীদের নিয়ে বিলাতি পুরুষ সমাজের একটা চাপা ভয়-উৎকণ্ঠা ছিল—এই বুঝি কোনো বিলাতি নারী ভারতীয় কারো প্রেমে পড়ে গেল! অথবা তাদের কন্যারা ভারতীয় সমাজে মিশে না জানি কত ভয়াবহ খারাপ কিছু শিখে ফেলল! তাই বিলাতি নারীরা যেন স্কুল বা অন্য কোথাও ভারতীয় ভাষা শিখতে না পারে, সেদিকে বিলাতি সমাজের নজর বেশ টনটনে ছিল। যতদূর সম্ভব ভারতীয় ভাষা এবং সংস্কৃতি থেকে নিজেদের স্ত্রী-কন্যাদের বিযুক্ত রাখতে বিলাতি পুরুষদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। শুধু কি তাই? বিলাতি নারীদের অনেক সময় সন্দেহের চোখেও দেখা হতো।

১৮৮০ সালে ফতেহগর শহরের সার্জন মেজর রেইড অত্যন্ত কঠোর এবং বিচ্ছিরি ভাষায় তার বিলাতি স্ত্রী মিস টাইটলারকে চিঠি লিখেছিলেন। “আমি ভাবতেও পারি না যে, আমি এমন একজনকে বিয়ে করেছি যে কিনা একজন ভারতীয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে!” পরবর্তীতে মিস টাইটলারকে তার স্বামী সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেন এবং মিস টাইটলারও আন্তরিকভাবে স্বামীর সাথে এ সংক্রান্ত ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তা আরো তিক্ততার পর্যায়ে চলে যায় এবং ফতেহগর শহরে ইংরেজ সমাজে বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন এবং বিলেতে সেক্রেটারি অব স্টেটকে এনিয়ে একটি চিঠি লিখেন: “আমি মনে করি রেইড আমাদের বিলাতিদের সুনাম খর্ব করছে এবং তার এই মুহূর্তেই অবসরে যাওয়া উচিত। ” কিন্তু বিলেতের তৎকালীন সেক্রেটারি অব স্টেট উত্তরে জানাল, রেইডকে অবসরে দেওয়ার কোনো মানে হয় না, কারণ বিষয়টা তার একান্ত ব্যক্তিগত। ব্যক্তিগত ঘটনাকে সামনে এনে তার কাজের ক্ষতি করতে বিলেত সরকার চায় না।

কিন্তু বিলাতি নারীরা কি সত্যি খুব সুখি হতো? বিলাতি মেমদের জীবন ঘেঁটে জানা যায়, দূর থেকে ভারত সম্পর্কে তাদের দু’রকম অনুভূতি কাজ করত। কেউ কেউ ভাবত ভারত মানেই শত রকম হীরা জহরত আর মণি মানিক্যে ভরা একটি দেশ। ভারত মানেই অবাধ টাকা পয়সা, আরাম আয়েশ আর নিশ্চিত এক জীবন! তখন তাদের চোখের সামনে ভেসে উঠত হাতির পিঠে চড়া নানারকম অলঙ্কারাবৃত্য মণি মুক্তা খচিত রাজা মহারাজাদের ছবি। আর, সেইসাথে তাদের প্রাণের মানুষটির ছবিও। যিনি হয়ত বিলাতি কোনো সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অথবা সরকারি কোনো চাকুরে কিংবা প্রচুর বিত্তবান একজন কেউ। পাশাপাশি ভারত সম্পর্কে তাদের মধ্যে ব্যতিক্রমী কিছু ভাবনাও পেয়ে বসত। সেখানকার কুশিক্ষা, কীট পতঙ্গ, কুসংস্কার, রাস্তার ধুলোবালি এমন আরো কত কী! সবচেয়ে বেশি ভাবনার বিষয় ছিল ভারতে অবস্থানরত হবু বা বর্তমান স্বামীটিকে নিয়ে। কেমন তার জীবন যাপন? আর্থিক অবস্থাই বা কেমন? নিশ্চয়ই ভারতে গিয়ে বেশ পয়সা পাতি বানিয়েছে। আর কী! এখন শুধু সুখ আর সুখ। কিন্তু সত্যি কি সেই সুখের নাগাল তারা পেত? চলুন সেই কথাই শুনি বিলাতি নারী মিনি ব্ল্যানের জীবন থেকে।

বিলেতের কেন্ট শহরটা মন্দ না। আশেপাশে দুয়েকটা কাপড়ের কারখানা নতুন গজিয়েছে। রাস্তার পাশেই ছোট ছবির মতো তিনশ’ বছরের পুরনো কাঠের তৈরি একটি গির্জা। গির্জার পাশেই ছোট একতলা বাড়ি। সেই বাড়িতেই মিনি ব্ল্যান তার মার সাথে বসবাস করেন। বাবা মারা গেছেন। মিনি ব্ল্যানের বয়স তখন বাইশ। দেখতে অসম্ভব সুন্দরী। এদিকে অনেক হবু বিয়েপ্রার্থীরা সারাক্ষণ তার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। সামাজিকভাবেও বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসছে। মিনি ভাবছে অন্য কথা। কাকে বিয়ে করা যায়? বরের যোগ্যতার মাপকাঠি কী? শেষ পর্যন্ত সে তার মা’র দ্বারস্থ হলো।

“বিয়ের কোনো সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারছি না। তুমি আমাকে সাহায্য করো। প্লিজ!”

“বিয়েটা করতে হবে খুব ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা ভাবনা করে। আবেগ দিয়ে সব কিছু হয় না। যুক্তির সাথে তোমাকে চলতে হবে। ” উলের কাঁটা দিয়ে শীতের জামায় নকশা তুলতে তুলতে কথাগুলো বললেন মিনির মা রেবেকা।

“ঠিক আছে। তোমার কথাই মানছি। তাহলে যুক্তিটা কী। ভালো পাত্র হিসেবে আমি কাকে নির্বাচন করব?” মিনির বোকার মতো প্রশ্ন।

“কেন জেমস ছেলেটা তো মন্দ না। খুব ভদ্র। দেখতেও বেশ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সামরিক কমর্কর্তা হয়ে এই তো বছর দুয়েক আগে সে ভারতে চলে গেল। তার যাওয়া উপলক্ষে কতরকম আনন্দ উৎসবই না আমরা করেছি। তুমি কি সেসব ভুলে গেছো? আর আমি ভালো করেই জানি, জেমস তোমাকে ভালোবাসে। ওর বাবা-মাও আমাকে সে কথা জানিয়েছে। কিন্তু তখন তুমি নিতান্তই বয়সে ছোট ছিলে। তাই কিছু বলিনি। শুনেছি ভারতে গিয়ে সে নাকি বেশ টাকা পয়সার মালিক হয়েছে। ”—একটানে কথাগুলো বলে এবার দম নিলেন রেবেকা।

“বাহ! তুমি কি তাহলে চাও আমি জেমসকে বিয়ে করে ভারতে চলে যাই? তুমিও কি যাবে আমার সাথে?” মিনির চোখে জিজ্ঞাসার সুর।

“বোকা মেয়ে। আমি তোর সাথে যাব কেন? তুই যাবি। সুন্দর একটা জীবন হবে। অনেক টাকা পয়সা নিয়ে তারপর ঠিক আবার বিলেতে চলে আসবি। কী, পারবি না?” হাতে বানানো উলের সোয়েটারটা মিনিকে পরিয়ে দিতে দিতে রেবেকার প্রশ্ন।

মিনি ব্ল্যান মায়ের কথা রেখেছিলেন। ১৮৫৬ সালের জুন মাসে লিভারপুল থেকে মাদ্রাজগামী একটি জাহাজে চড়ে ভারতে আসেন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তরুণ ক্যাপ্টেন জেমসকে বিয়ে করেন। কিন্তু মিনি ব্ল্যান যে স্বপ্ন আর ভালোবাসা নিয়ে নিজ দেশ ছেড়ে ভারতে পারি জমিয়েছিলেন তা শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল। তিনি ভারতে এসে নানারকম ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন। ভারতে আসার এক বছর পর ১৮৫৮ সালে শুরু হয় আরেক সমস্যা। সিপাহী বিপ্লবের ঢেউ তখন গোটা ভারতবর্ষে ইংরেজদের বুকে কাঁপুনি জাগিয়ে তোলে। অনেক কষ্টে সে যাত্রায় তারা রক্ষা পায় বটে তবে এর ধকল তাদের অনেকদিন পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হয়েছিল। এদিকে পরপর দুটো মৃত সন্তান জন্ম দিয়ে মিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। খবর আসে বিলেতে থাকা তার বুড়ি মাটাও নাকি অনেক অভিমানে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। এদিকে একটা সময় মিনি ব্ল্যান এবং তার স্বামী বড় ধরনের আর্থিক সমস্যায় পড়লেন। ১৮৬০ সালে মিনি ব্ল্যান লিখলেন, “মূর্ছা যাওয়ার মতো এমন একটি সিদ্ধান্ত আমি কিভাবে নিয়েছিলাম জানি না। অর্থহীন, অকর্মণ্য এমন স্বামীকে বিয়ে করে কে ভারতে আসে? হায়! বিলেতে ফিরে যেতে পারলে কত ভালো হতো! কিন্তু তা তো সম্ভব নয়। বুড়ো হওয়ার আগে মনে হয় না যেতে পারব। ”

মিনি ব্ল্যানের কপাল খারাপ ছিল। কিন্তু তাই বলে সবার কপালই কি পুড়েছিল? ১৯২২ সালে কাথলিন উইক জাহাজে ভাসলেন একটি সরকারি চাকরি বাগিয়ে। জাহাজেই পরিচয় হলো বিলাতের উচ্চপদস্থ আইসিএস কর্মকর্তা গ্রিফিথের সাথে। পরিচয় থেকে প্রেম এবং প্রেম থেকে সেই জাহাজেই বাগদান। কাথলিনের ভাষায়, “এক পূর্ণিমার রাতে লহিত সাগরের কোল ঘেঁষে আমাদের জাহাজ যখন শান্ত হয়ে ভারতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই সে আমাকে প্রস্তাবটা দেয় এবং আমরা বিয়ের বাগদান সম্পন্ন করি। ”

রাতারাতি পুরো জাহাজের মধ্যে সুখবরটি ছড়িয়ে পড়ে। একজন বয়স্ক বিলাতি মেম এই খবর শুনে কাথালিন উইককে অভিনন্দন জানিয়ে বললেন, “ওহ! শুনেছি তোমরা নাকি বাগদানের কাজটি সেরে ফেলেছো! অভিনন্দন জানাই তোমাদের। আর জানো তো, তুমি কিন্তু ঠিক কাজটি করেছো। তুমি নিশ্চয়ই জানো যে সে (গ্রিফিথ) একজন স্বর্গে জন্ম নেওয়া শিশু। দি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস বলে কথা!” বলাই বাহুল্য সেই সময় ভারতীয় আইসিএস কর্মকর্তাদের ব্রাহ্মণদের সাথে তুলনা করা হতো এবং বলা হতো তারাও স্বর্গে জন্ম নেওয়া শিশু। যেসব ভাগ্যবতী বিলাতি নারীরা এসব ‘স্বর্গীয় শিশু’দের বিয়ে করে ভারতে পারি জমিয়েছিলেন তাদের জীবনে সুখের কোনো অভাব ছিল না।

কিন্তু কথা হলো—ক’জন বিলাতি নারীই আর তাদের ভাগ্যে আইসিএস স্বামী জোটাতে পেরেছিলেন? ভারতে সুখের সন্ধান পাওয়া খুব সোজা ছিল না।

পর্ব ২২ পড়তে ক্লিক করুন



বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।