ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

স্বাধীনতা আনতে শিল্পীদের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৭
স্বাধীনতা আনতে শিল্পীদের ভূমিকা ছিলো অপরিসীম ‘সূর্যোদয়ের গান’ সিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ অতিথিরা। ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা

ঢাকা: স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে শিল্পীদের অপরিসীম ভূমিকা ছিলো বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
 

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাতে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘সূর্যোদয়ের গান’ সিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা জানান। বাংলাদেশ সংগীত পরিষদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 
 
সূর্যদয়ের গান পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাবে-এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. শিরীন শারমিন বলেন, গান গাওয়া এবং শোনার মধ্যে এক পরম  আনন্দ রয়েছে। এ আনন্দলোকের ভেতর দিয়েই সত্য ও সুন্দরের অন্বেষণ করতে হয়। শিল্পীরা সারাজীবন সেই কাজটিই করেন।
 
তিনি বলেন, আমাদের দেশের বরেণ্য শিল্পীরা জাতির সব প্রয়োজনে, দুর্যোগের সময় আত্মমানবতার সেবায় তারা এগিয়ে এসেছেন। অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই হোক, যেকোনো সংগ্রাম, যেকোনো সত্য প্রতিষ্ঠা, যেকোনো বিজয়ের লক্ষ্যে, যেকোনো আন্দোলনের পুরোভাগে আমরা সাংস্কৃতিক আন্দোলকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে যুক্ত হতে দেখেছি।
 
স্পিকার বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের বড় অর্জন। যার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম একটা বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। স্বাধীনতার মাসে আমরা দেখতে পাই, মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শিল্পীরা কীভাবে অবদান রেখেছেন। স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে শিল্পীদের অপরিসীম ভূমিকা ছিলো। বক্তব্য রাখছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।  ছবি: আনোয়ার হোসেন রানা
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমান, সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান, সৈয়দ আব্দুল হাদী, সঙ্গীত পরিচালক শেখ সাদী খান, বাংলাদেশ সঙ্গীত পরিষদের সভাপতি রেহানা আশিকুর রহমান, মহাসচিব ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, কবি কাজী রোজী, কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
 
কামাল লোহানী বলেন, যে গানগুলো গেয়ে ও শুনে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা পেতেন, সেই গানগুলো আজ বেসুরো করে গাওয়া হচ্ছে। যে গানগুলো অবরুদ্ধ বাঙালি জাতিকে রুঁখে দাঁড়ানোর সাহস যোগাতো সেই গানগুলো আজ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
 
৭ মার্চ আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জয়বাংলা কনসার্টে বিকৃত সুর ও উচ্চারণে মুক্তিযুদ্ধের গান গাওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যুদ্ধের কঠিন সময়গুলোতেও আমরা বেসুরো করে গান গায়নি। আর আজ ৭ মার্চের জয়বাংলা কনসার্টে বেসুরো করে গান গাওয়া হয়। যারা এভাবে বেসুরো করে গান উপস্থাপন করছে, তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
 
সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান বলেন, আমরা শিল্পীরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না। তাই আমাদের শিল্পকে নিয়ে যার যা ইচ্ছা তাই করে। সুতরাং আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
 
তিনি বলেন, এ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দিয়ে গিয়েছিলেন। তার এক ডাকে গোট বাঙালি জাতি আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। সে কারণেই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় এসেছিলো। কৃষ্টি, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি রক্ষায় আমাদের আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
 
সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, ফেব্রুয়ারি এলে আমরা ভাষার গান গাই। মার্চ ও ডিসেম্বর এলে মুক্তিযুদ্ধের গান গাই। বাকি সারা বছর আমরা কী করবো? বিকৃত উচ্চারণে বাংলা বলবো? বিকৃত সুরে গান গাইবো? এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
 
ফেরদৌসী রহমান বলেন, ৫২ থেকে আজ পযর্ন্ত আমরা কণ্ঠযোদ্ধারা যুদ্ধ করে যাচ্ছি। ৭১-এ যুদ্ধ করে দেখিয়ে দিয়েছি আমরা পারি। কিন্তু আমরা যুদ্ধ করতে চাই না। গান গাইতে চাই। প্রেমের গান, ভালোবাসার গান, দেশের গান। ।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৭/আপডেট: ০০৪২ ঘণ্টা
এজেড/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।