ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা পেলেন তিন রবীন্দ্রসাধক

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮

ঢাকা: সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের প্রথিতযশাদের নিয়ে ১৮৯৭ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘খামখেয়ালী সভা’ নামে একটি আড্ডা চালু করেছিলেন। দীর্ঘ ১১৭ বছর পর ২০১৪ সালে ঢাকায় খামখেয়ালী সভা শীর্ষক সেই আড্ডাটির আবার পুনর্জাগরণ হয়।

চলতি বছর পুনর্জাগরিত সেই আড্ডাটি পদার্পণ করলো চতুর্থ বছরে। সেই সুবাদে হয়ে গেল খামখেয়ালী সভার চতুর্থ বর্ষপূর্তি।

এ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ছিল আয়োজনের শেষ দিন। রবীন্দ্রচর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এদিন সন্ধ্যায় তিন গুণীজনকে ‘রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা’ জানায় খামখেয়ালী সভা।

পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথ চর্চার অন্যতম প্রতিষ্ঠান টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মঞ্জুলা বসু, প্রয়াত অধ্যাপক-গবেষক করুণাময় গোস্বামী ও প্রবীণ রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক পেয়েছেন এই সম্মাননা।

করুণাময় গোস্বামীর পক্ষ থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার সর্বশেষ কর্মস্থল ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের কর্ণধার এম কে বাশার। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও প্রাবন্ধিক-গবেষক আহমদ রফিক তাদের হাতে এই পুরস্কারটি তুলে দেন।

এ সময় তার মেয়ে তিথি গোস্বামী প্রবাস থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে একটি পত্র পাঠান আয়োজকদের। পরে সেটি পড়ে শোনানো হয়। এতে তিথি বলেন, “বাবা সারা জীবন মানুষের সাথে মানুষের মিলনের কথা বলে গেছেন। তিনি সারা জীবন তরুণদের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। দুনির্বার তরুণের মতো কাজ করে গেছেন আজীবন। ”

১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠার পরে পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চর্চা আরো জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট। সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক মঞ্জুলা বসু বলেন, “৫৩ বছর ধরে আমি টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্ত, এই পুরস্কার যে তাদের জন্যও এক দারুণ সম্মান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চর্চায় এই পুরস্কার আমাদের আরো অনেক প্রেরণা যোগাবে। ”

মিতা হক, বলেন, “বেশ কদিন ধরেই আমি একটু কম কাজ (গান) করছি। এই পুরস্কারটি আমাকে একটু উজ্জ্বীবিত করবে, এবার একটু জোরেশোরেই গানটা করতে হবে। ”

আহমদ রফিক বলেন, “আজকের রবীন্দ্রগুণীরা নিজ নিজ কক্ষ থেকে  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য, গান আর তার জীবনের নানা দিক নিয়ে কাজ করেছেন। আমরা তো গুণীজনদের সময়মতো সম্মান দেই না। এ পুরস্কারটি প্রাপ্তির পরে রবীন্দ্রগুণীরা তাদের চর্চায় নানামাত্রিক বিস্তার ঘটাবেন। ”

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার যুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সেনাপতি। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস। ”

সভায় সভাপতিত্ব করেন খামখেয়ালী সভার সভাপতি মাহমুদ হাশিম।

সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা শেষে ছিল নৃত্য-গীত ও কবিতায় সজ্জিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। কবিতা পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও তামান্না তিথি। রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন বুলবুল ইসলাম, অদিতি মহসিন, জাকির হোসেন তপন ও ভারতের কণ্ঠশিল্পী অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। আরো ছিলো নৃত্যশিল্পী র‌্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিসের একক পরিবেশনা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।