ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

কবিয়াল মনিন্দ্র দাসকে নিয়ে শামসুল আরেফীনের বই

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৮
কবিয়াল মনিন্দ্র দাসকে নিয়ে শামসুল আরেফীনের বই ‘কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও লেখক

ঢাকা: বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ‘বলাকা প্রকাশন’ থেকে লোক-গবেষক ও কবি শামসুল আরেফীনের সংগ্রহ ও সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে ‘কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা’। 

উভয় পারের বাংলার বিশ শতকের খ্যাতিমান কবিয়াল মনিন্দ্র দাসকে নিয়ে রচিত গ্রন্থটি চলতি বছরের (২০১৮) মার্চে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পাঠক, গবেষক, বোদ্ধা ও সুধীমহলের বিশেষ নজর কাড়ে।  

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত লেখক ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস বিষয়ক গবেষক প্রভাংশু ত্রিপুরা কবিগানে মনিন্দ্র দাসের আবির্ভাব সম্পর্কে বলেন, আগে বিভিন্ন পৌরাণিক বিষয়বস্তু নিয়ে বাঁধা হতো কবিগান।

এতে যুক্ত থাকতো অশ্লীলতা, বিকৃত রুচি ও গালি। ফলে কবিগানে শুদ্ধি, শালীনতা ও সৌন্দর্য আনার চেষ্টা করেন হরিচরণ আচার্য (১৮৬১-১৯৪১)। হরিচরণ আচার্যের শেষ সময়ে অর্থাৎ বিশ শতকের প্রথমে কবিয়াল করিম বখশের শিষ্য হিসেবে চট্টগ্রামের কবিগানে মনিন্দ্র দাসের আবির্ভাব।

কবিগানে আবির্ভাবের আগে কলকাতায় ব্রিটিশবিরোধী গ্রন্থ রচনা করেন মনিন্দ্র দাস। গ্রন্থগুলো বিভিন্ন নামে ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে অনেকের জেল হয়। সূর্য সেনের সঙ্গে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার অপারেশনে জড়িত ছিলেন সন্দেহে তিনিও কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজবন্দি হিসেবে কারাভোগ করেন। চারু মজুমদারের সঙ্গেও ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী হিসেবে মনিন্দ্র দাস ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।

এসব ঘটনা মনিন্দ্র দাসকে কবিগানের চর্চায় দারুণ প্রভাবিত করে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় চল্লিশ দশকে, যখন রমেশ শীল কবিগানকে একেবারে অশ্লীলতা, গালি ও বিকৃত রুচি মুক্ত করে পৌরাণিক ও কাল্পনিক বিষয় থেকে মাটিতে নামিয়ে আনার কাজে যুক্ত হলে মনিন্দ্র দাস তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।  

প্রভাংশু ত্রিপুরা আরও বলেন, কবিয়াল মনিন্দ্র দাস জীবনের শেষ পর্যায়ে ‘মোহনানন্দ অবধূত পরমহংস’ নাম ধারণ করে আধ্যাত্মিক সাধনায় মগ্ন হয়ে মোহনানন্দ ভণিতায় আধ্যাত্মিক ভাবধারার অনেক গান-কবিতা রচনা করেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০০০ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে তিনি এবং তার রচনা সমূহ ক্রমশ বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে থাকে।

গ্রন্থটির প্রকাশক এবং চট্টগ্রামের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক জামাল উদ্দিন গ্রন্থটি সম্পর্কে বলেন, ‘কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা’ গ্রন্থটির মাধ্যমে কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তার রচনাকে বিস্মৃতি বা বিলুপ্তি থেকে উদ্ধার করে লোকগবেষক ও কবি শামসুল আরেফীন বিরাট একটি অবদান রাখলেন।  

গ্রন্থটির লেখক শামসুল আরেফীন দীর্ঘকাল ধরে লোকগবেষক হিসেবে বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে বেশ পরিচিত। তিনি লোক ও অন্যান্য বিষয়ে চট্টগ্রামের বলাকা প্রকাশন থেকে অনেকগুলো গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।